নারীদের মূত্রপথে সংক্রমণ এবং করণীয়
দৈনিক সিলেট ডট কম
ডা. মো. অহিদুজ্জামান: মুত্রপথে সংক্রমণজনিত রোগে অনেকেই ভুগে থাকেন। অনেক নারীকে দেখা দেয় এ সমস্যায় ঘন ঘন ভুগে থাকেন। কেন তারা ঘন ঘন এ রোগের শিকার হন, তা নির্ণয় করা জরুরি এবং কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা প্রয়োজন।
অ্যান্টিবায়োটিক প্রদানের আগে রোগের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা এ ক্ষেত্রে খুবই জরুরি। সাধারণত একবার এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে আক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বার ভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে অনেকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তবে এ রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
কিডনি রোগ ও মূত্রপথের সংক্রমণ এক নয়। এর একটির কারণে অন্যটি হতে পারে। কিডনি রোগের প্রধান দুটি কারণ হলো-ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। পরিবারের কারো কিডনি সমস্যা হলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া নেফ্রাইটিস, ডায়রিয়া, পুড়ে যাওয়া, একাধিকবার মূত্রনালির সংক্রমণ, মূত্রনালিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা, পলিসিস্টিক কিডনি, টিউবারকুলোসিস বা যক্ষ্মা, হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাওয়া, দীর্ঘদিন ব্যথার ওষুধ খাওয়া ইত্যাদি কারণে কিডনি রোগ হতে পারে।
এ রোগের উপসর্গ হলো-ঘন ঘন প্রস্রাব, রক্তস্বল্পতা, ক্লান্তিবোধ, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, হাত-পা ও চোখ-মুখ ফুলে যাওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা, মাংসপেশিতে খিল ধরা, হাত ও পায়ের আঙুল ক্রমে ফুলে যাওয়া, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা, রক্তে ইউরিয়া ও ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, প্রস্রাবে রক্ত, ইউরিক অ্যাসিড ও প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, অল্প পরিশ্রমে বুক ধড়ফড় ও শ্বাসকষ্ট হওয়া, কোমরের পেছন দিকে ব্যথা করা ইত্যাদি। লক্ষণগুলো হলো-এ রোগে সবার উপসর্গ থাকে না। তবে বেশিরভাগের কিছু লক্ষণ থাকে।
এসবের মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব করার তাড়া এবং প্রস্রাব করার সময় মূত্রথলি বা মূত্রনালি এলাকায় ব্যথা ও জ্বালাপোড়া অনুভব করা। একপর্যায়ে দেখা যায়, প্রস্রাব করা হচ্ছে না অথচ ক্লান্ত, বিচলিত হয়ে পড়েছেন এবং ব্যথা অনুভব করছেন। শিশুর ক্ষেত্রেও বেশিরভাগ মা-বাবা উপেক্ষা করেন। যদি শিশু খিটখিটে হয়ে যায়, স্বাভাবিকভাবে খেতে না চায়, দীর্ঘদিন জ্বর থাকে, পাতলা পায়খানা হয় কিংবা স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে তার মূত্রপথের সংক্রমণ হয়েছে। যদি শিশুর প্রস্রাবে কোনো ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করেন, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসককে দেখাবেন।
লেখক : কনসালট্যান্ট, ইউরোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়