রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আপত্তিকর পোস্ট, আইনি নোটিশ নোবেলকে
দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডেস্ক: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে ফেসবুকে কটুক্তির জেরে আইনি নোটিশ পেয়েছেন সংগীত শিল্পী মইনুল আহসান নোবেল। তাকে নোটিশটি পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের একজন আইনজীবী।
রোববার (১৪ আগস্ট) ডাকযোগে নোবেলের ঢাকার বাসার ঠিকানায় এ নোটিশ পাঠান তিনি। সেখানে সাত দিনের মধ্যে নোবেলকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
নোবেল তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ‘জাতীয় সংগীত’ ও ‘রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর’ সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করায় তাকে আইনি নোটিশটি পাঠিয়েছেন মিঠুন বিশ্বাস।
নোবেল তার ভেরিফাইড ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে বলেন, “আসুন! রবীন্দ্রনাথের সোনার বাংলা পরিত্যাগ করে ‘আমার’ সোনার বাংলাকে ভালোবাসি। ভারতের চাটুকারিতা করতে করতে এখন নিজেকে গো-মূত্র সেবনকারী মনে হয়! ইয়াক থু!”
সম্প্রতি ফেসবুকে তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ-নজরুল তো আর নবী কিংবা দেবতা না যে তাদের গান প্যারোডি আকারে গাওয়া যাবে না! রবীন্দ্রনাথ এদেশের কবিদের মূল্যায়ন করে যায় নাই, তারে নিয়ে যে এদেশে চর্চা হয় এটাই রবীন্দ্রনাথের জন্য বেশি। তাছাড়া বাংলাদেশের সাহিত্যে যেহেতু রবীন্দ্রনাথের অবদান নিতান্তই কম, নেই বললেই চলে, সেক্ষেত্রে তার গান এদেশের কেউ যদি প্যারোডি আকারে গায় সেটা রবীন্দ্রনাথের জন্যই মঙ্গলজনক।’
আর এই বক্তব্যের পর থেকেই এ নিয়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। যদিও বরাবরই বিতর্কে থাকতে ভালবাসেন এই সংগীত শিল্পী।
তারপরও গত বুধবার নোবেল ফেসবুকে আরও লেখেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তার রাবীন্দ্রিক সাহিত্যচর্চা অবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে বয়কট করা হউক। আমাদের জাতীয় কবি নজরুল! বিদ্রোহী কবি; যখন আমাদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় ছিলেন। রোজ রোজ ব্রিটিশদের কাছে কারাবন্দি হতেন। কনডেম সেলে টর্চারের শিকার হচ্ছিলেন। তখন ব্রিটিশদের চাটুকারিতা করে সো-কল্ড বিশ্বকবি বিন্দাস আমাদের বাপ-দাদার রক্ত চুষে খাচ্ছিল।”
নোবেলের এই ফেসবুক পোস্টও নিমেষেই ভাইরাল হয়ে যায়। তারপর সংগীতশিল্পীর সমালোচনায় সরব হন বেশিরভাগ নেটিজেন এবং রিয়্যালিটি শো’য় রবীন্দ্র সংগীত গাওয়ার পরেও রবীন্দ্রনাথকে বয়কটের ডাক দেওয়া ভেকধারীর মতো আচরণ বলেও দাবি করছেন অনেকেই।
আর এর সূত্র ধরেই আসে আইনি নোটিশ।
নোটিশে বলা হয়, ১০ ও ১১ আগস্ট নোবেলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ‘নোবেল ম্যান’ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় সংগীত নিয়ে পৃথক দুটি পোস্ট দেওয়া হয়। যেখানে মনগড়া, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক, বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে জাতীয় সংগীতের বিরুদ্ধাচার করা হয়েছে। একই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিকের হৃদয়ে আঘাত করেছেন। এটি দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আর এই প্রসঙ্গে আইনজীবী মিঠুন বিশ্বাস বলেন, “নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে বিদ্বেষমূলক পোস্টগুলো ফেসবুক থেকে অপসারণ করে নিজের ভুল স্বীকার করে নোবেলকে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হবে।”
প্রসঙ্গত, বছর কয়েক আগে পশ্চিমবঙ্গের ‘সারেগামাপা’ রিয়েলিটি শো-র দৌলতে প্রবল জনপ্রিয়তা পান মাইনুল আহসান নোবেল। যদিও সবার কাছে তিনি নোবেল ম্যান নামেই পরিচিত। জনপ্রিয়তা পাওয়ার সঙ্গে একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন এই গায়ক।