বর্ষাকালে হতে পারে যে ৫ ধরনের অ্যালার্জি
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
বর্ষায় অ্যালার্জির সমস্যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায়। গরমের পাশাপাশি কখনো ঠান্ডা আবহাওয়া আবার বৃষ্টি সব মিলিয়ে এ সময় শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন ছোট-বড় সবাই। অনেকের তো বৃষ্টির পানি গায়ে পড়লেও চুলকানি, ত্বক লালচে হয়ে ফুলে যাওয়া বা র্যাশ ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যালার্জি আছে এমন ব্যক্তিদের জন্য বর্ষা মৌসুম সবচেয়ে খারাপ। এ সময় ত্বকের অ্যালার্জি বা শ্বাস প্রশ্বাসের অ্যালার্জি বেড়ে যায়। বর্ষায় হওয়া অ্যালার্জির বেশিরভাগই পরাগজনিত কারণে ঘটে।
এ সময় অ্যালর্জির প্রভাবে ত্বক ও চোখ সংক্রমিত হতে পারে। যেমন- কনজেক্টিভাইটিস, চুলকানি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি বর্ষাকালে স্যাঁতসেঁতে ও অত্যাধিক আর্দ্রতার কারণে অ্যালার্জেন সংক্রমণের কারণে হয়। জেনে নিন বর্ষায় কী ধরনের অ্যালার্জি হতে পারে-
ত্বকের অ্যালার্জি
বর্ষায় ত্বকের অ্যালার্জি বৃদ্ধি পায়। যেখানে দূষণের মাত্রা খুব বেশি, সেখানে চলাফেরার মাধ্যমে রোগীর শরীরে অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। বর্ষা মৌসুমে জামাকাপড় ও জুতা ভিজে যাওয়া খুব সাধারণ বিষয়, যা পরে অ্যালার্জির হটফিডে পরিণত হয়।
এছাড়া সস্তা সিনথেটিক পদার্থ দিয়ে তৈরি রেইনকোট, জ্যাকেট ও গ্লাভস ত্বকের সংস্পর্শে আসার কারণেও ছত্রাকের সংক্রমণ বাড়িয়ে তোলে। ফলে শরীরের বিভিন্ন ভাঁজ যেমন- হাঁটু বা কনুইতে গিয়ে পৌঁছায় বিভিন্ন ছত্রাক। এর ফলে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়।
পোষা প্রাণী, পরাগ বা ধূলিকণার সংস্পর্ষে আসলে হিস্টামিনস নামক রাসায়নিক উপাদানের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে অ্যালার্জির ট্রিগার করে থাকে।
এর থেকে বাঁচতে এজন্যই বিশেষজ্ঞরা অ্যান্টি হিস্টামাইন জাতীয় ওষুধ মৌসুমী অ্যালার্জির চিকিত্সায় ব্যবহার করে। ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, তরল, অনুনাসিক স্প্রে ও আইড্রপসসহ বিভিন্নভোবে পাওয়া যায় এটি।ৎ
হাইপারপিগমেন্টেশন
বর্ষাকালের আরও একটি সাধারণ এলার্জি হলো হাইপারপিগমেন্টেশন। যা ত্বকে বিশেষ করে মুখে গাঢ় প্যাঁচ সৃষ্টি করে।
সাধারণত ত্বকের মেলানোসাইট (মেলানিন উত্পাদনকারী কোষ) যখন সূর্যের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসে, তখন হাইপারপিগমেন্টেশনের সৃষ্টি হয়।
বর্ষায় যেহেতু সব সময় সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না, তাই যখন হঠাৎ সূর্যের সংস্পর্শে যাওয়া হয় তখন এই অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়।
ব্রণ ও একজিমা
বর্ষায় ব্রণ ও একজিমার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর্দ্রতা ও পরিবর্তিত আবহাওয়া ত্বকে চুলকানি, লালচে ভাব, ব্রণ ও একজিমা সৃষ্টি করতে পারে।
সঠিক চিকিত্সা ও ত্বকের যত্ন নিলে অনেক সময় এগুলো সেরে যায়। তবে বেশি সমস্যা হলে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
ফেসিয়াল ফলিকুলাইটিস
বর্ষায় দেখা যায়, ত্বকের বিভিন্ন স্থানের লোমের ফলিকগুলো প্রদাহে পরিণত হয়। যা ফলিকুলাইটিস নামে পরিচিত। ফলিকুলাইটিস সাধারণত বাহু, উরু, পশ্চাতদেশ ও কপালে দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত আর্দ্রতা, ঘাম, ডিহাইড্রেশনের মাধ্যমে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে শরীরে। এর ফলে ত্বকে দেখা দেয় ফেসিয়াল ফলিকুলাইটিস। ঘাম নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত গোসল ও ত্বক শুষ্ক রাখার মাধ্যমে এ ধরনের অ্যালার্জি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ছত্রাকের সংক্রমণ
বর্ষা মৌসুমে হাত বা পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে ছত্রাক সংক্রমণ দেখা দেয়। যাকে বলা হয় অ্যাথলেট ফুট। ঘাম বা পানিতে ভেজার কারণে পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে ঘা হয়ে থাকে।
চুলকানি, জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হয়ে থাকে এর ফলে। শুধু পায়েই এ সংক্রমণ সীমাবদ্ধ থাকে না বরং পুরো শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। সূত্র: বোল্ডস্কাই