এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণকান্ডের তিনবছর, এগুচ্ছে না বিচার

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনার দুই মামলার বিচার তিন বছরেও হয়নি। দেশে-বিদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী ঘটনাটির আজ সোমবার তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। এই তিন বছরে মামলার বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি শূন্য। বিচার কার্যক্রম কার্যত বন্ধ রয়েছে। মামলা দুটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে লিভ টু আপিল। ফলে মামলা দুটির নথিপত্র সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেই পড়ে আছে। নথি নড়ছে না, বিচারও হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
বাদী পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার বিচার কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় দীর্ঘসূত্রিতার দিকে যাচ্ছে। সেই সুযোগে আসামিরা জামিনে বের হয়ে যাওয়ার শংকাও তৈরি হয়েছে। শংকা আছে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়েও।
এদিকে, শোনা যাচ্ছে বর্বর এই ঘটনার মামলা আপোষ রফায় শেষ করতে কেউ কেউ চেষ্টা তদ্বিরও শুরু করেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নগরীতে একটি বৈঠকও হয়েছে। আর আপোষ রফা করতে করা হয়েছে ৮০ লাখ টাকার বাজেটও। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে বাদী পক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান এডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী গতকাল রোববার দুপুরে বলেন, অভিযোগ গঠনের পর থেকেই দুটো মামলার আর অগ্রগতি নেই। কার্যত মামলা দুটোর বিচার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দুটো প্রেরণের জন্যে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষ আপীল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করেছেন। আমাদেরকে নোটিশ দিয়ে লিভ টু আপিল দায়েরের বিষয়ে জানানো হয়েছে।
এখন ধার্য তারিখে আসামিদেরকেও আর আদালতে তোলা হয়না। মামলার বিচার কার্যক্রমের দীর্ঘ সূত্রিতার ফলে আসামিরা জামিনে বেরিয়ে যাওয়ার শংকা আছে।
বাদী পক্ষের অপর আইনজীবী এডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এটি দেশের মধ্যে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এই গণধর্ষণের ঘটনার পরই কিন্তু জাতীয় সংসদে ধর্ষণ আইনের সংশোধনী এনে মৃত্যুদন্ডের বিধান করা হয়। আমরা বাদীর আইনজীবী হিসেবে এর ন্যায় বিচার চাই।
মামলার বিচার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে বাদী মো. মাইদুল ইসলামও জানিয়েছেন। গতকাল রোববার বিকেলে সিলেটের ডাককে তিনি এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ন্যায় বিচার চাই।
জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বহুল আলোচিত এ মামলার ধার্য তারিখ ছিল। কিন্তু ওই দিন আদালতে কারাবন্দী কোনো আসামিকে হাজির করা হয়নি। আগামী ২৯ অক্টোবর রোববার একই আদালতে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
মামলার অন্যতম আসামি মাহবুবুর রহমান রনিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন গত ২৩ আগস্ট বুধবার স্থগিত করেন আপীল বিভাগ। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ আসামি মাহবুবুর রহমান রনির জামিন স্থগিতের আদেশ দেন। এসময় আদালত বলেন, ‘স্পর্শকাতর মামলা তাই জামিন নয়’। সেই সঙ্গে বিচারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চান আপিল বিভাগ।
বাদীপক্ষ জানায়, গণধর্ষণের ঘটনায় দুই মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বদলি করতে হাইকোর্ট বেঞ্চের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আপীল বিভাগের এডভোকেট অন রেকর্ড হরিপদ পাল ২৬ জুন স্বাক্ষরিত এক পত্রে বাদীকে লিভ টু আপিল দায়েরের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হয়। লিভ টু আপিলের শুনানি হয়নি বলে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন। গত জুন মাসে এই লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়। এর আগে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গণধর্ষণ ও চাঁদাবাজির মামলা দুটো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণের চূড়ান্ত আদেশ দেন। আদেশে ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে গেজেট জারি করতেও বলা হয়েছিল। এরও আগে ওই বছরের ১ আগস্ট বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বাদীপক্ষ একটি রিট দায়ের করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ১৬ আগস্ট দুই মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বদলির জন্যে প্রক্রিয়া গ্রহণে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট গত বছরের ২৭ জুলাই আসামি রবিউল ইসলামের জামিন শুনানিতে মামলার বিচার বিলম্বিত হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি এস এম। কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক মামলার জেলা মনিটরিং কমিটির সভায় আলোচিত গণধর্ষণ মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও এরপর আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। অবশ্য, পরে বলা হয়, ভুলবশতঃ এমনটি হয়েছিল।
সূত্র জানায়, সাক্ষ্য কেন শুরু করা হয়না মর্মে রাষ্ট্র পক্ষকে গত বছরের ২১ আগস্ট কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক আট আসামির উপস্থিতিতে গত বছরের ১১ মে বুধবার গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলার অভিযোগ গঠন করেন। এর আগে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি রোববার ওই ট্রাইব্যুনালে সকল আসামির উপস্থিতিতে অপহরণ, গণধর্ষণ ও গণধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ গঠন করা হয়।
গণধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠনের পর ওই বছরের ২৭ জানুয়ারি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত। কিন্তু বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে একসাথে একই আদালতে মামলা দু’টি চালানোর আবেদন করায় আবেদনটির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে যাননি। ওইদিন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ থাকার পরও ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে যাননি মামলার বাদীসহ পাঁচ সাক্ষী। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি পুনরায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত। ওইদিন গ্রেফতারী পরোয়ানামূলে মামলার বাদীকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আদালতে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে, ওই দিন উচ্চ আদালত শুনানি শেষে আদেশ দিলে বাদীকে ছেড়ে দেয়া হয়।
দিকে, ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি বাদীপক্ষ আদালতে দুটি মামলার বিচার কার্যক্রম এক সঙ্গে শুরু করার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটি খারিজ করে দেন। এরপর বাদীপক্ষ মামলা দুটির বিচার কার্যক্রম একই আদালতে সম্পন্নের জন্যে উচ্চ আদালতে একটি ফৌজদারি বিবিধ মামলা করেন। ফৌজধারি বিবিধ মামলা নম্বর -৮৯৫২/২০২১। তৎকালীন হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এ মামলার শুনানি করে মামলা দুটির বিচার কার্যক্রম এক সাথে একই আদালতে সম্পন্নের আদেশ দেন।
গণধর্ষণের ঘটনায় সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়ার তাহিদ মিয়ার পুত্র সাইফুর রহমান (২৮), হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ার শাহ জাহাঙ্গির মিয়ার পুত্র শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উমেদনগরের মৃত রফিকুল ইসলামের পুত্র তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), জকিগঞ্জের আটগ্রামের মৃত অমলেন্দু লস্কর ওরফে কানু লস্করের পুত্র অর্জুন লস্কর (২৬), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুরের দেলোয়ার হোসেনের পুত্র রবিউল ইসলাম (২৫), কানাইঘাট উপজেলার লামা দলইকান্দির (গাছবাড়ী) সালিক আহমদের পুত্র মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), সিলেট নগরীর গোলাপবাগ আবাসিক এলাকার (বাসা নং-৭৬) মৃত সোনা মিয়ার পুত্র আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল (২৬) ও বিয়ানীবাজার উপজেলার নটেশ্বর গ্রামের মৃত ফয়জুল ইসলামের পুত্র মিজবাউল ইসলাম রাজনকে (২৭) অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর দন্ডবিধি আইনের ৩৪২/৩২৩/৩৭৯/৩৮৫/৩৪ ধারা তৎসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী, ২০০৩) এর /৭/৯/(৩)৩০ ধারায় অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পুলিশ। এতে ৫২ জনকে সাক্ষী রাখা হয়। ঘটনার মাত্র ২ মাস ৮ দিন পর ১৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেয়া হয়।
এদিকে, ছাত্রাবাস থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সাইফুর রহমান ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনিকে আসামী করে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯/১৯এ ধারায় অভিযোগপত্রটি জমা দেয়া হয়। ঘটনার ১ মাস ২৭ দিন পর অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
আসামিদের প্রত্যেকের ডিএনএ নমুনা ওসমানী হাসপাতালের ওসিসির মাধ্যমে সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে প্রেরণ করে পুলিশ। ডিএনএ রিপোর্টে ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর ও মাহবুবুর রহমান রনির ডিএনএ ‘ম্যাচিং’ পাওয়া যায়। এদিকে আইনুদ্দিন ও মিসবাহ উদ্দিন রাজন’র ডিএনএ ‘মিক্সিং’ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ডিএনএ রিপোর্ট’র ফলে নিশ্চিত হওয়া যায়, এই ৬ জনই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছিল। আইনুদ্দিন ও মিসবাহ ধর্ষণের সময় ‘কিছু ব্যবহার করায়’ ম্যাচিং এর বদলে রিপোর্টে মিক্সিং পাওয়া যায়। বাকী ৪ জন ‘কোনো কিছু ব্যবহার না করে’ সরাসরি ধর্ষণ করে বলে নিশ্চিত হয় সিআইডি। আর রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম ধর্ষণে সহযোগিতা করে।
বর্বরোচিত এ ঘটনার পরে আসামিরা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে আত্মগোপন করে। আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারের পর আদালত তাদের প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ডে দেন। রিমান্ড শেষে পর্যায়ক্রমে ৮ আসামীর সকলেই নিজেদের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে আসামিরা গৃহবধূকে তুলে নেয়াসহ গণধর্ষণ ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। আসামীদের সকলেই ঘটনার আগ পর্যন্ত ছাত্রলীগ টিলাগড় গ্রুপের সক্রিয় নেতাকর্মী ছিল। বর্তমানে তাদের সকলে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছে।
ভয়ঙ্কর সেই সন্ধ্যা
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ সুরমার জৈনপুরের ২৪ বছর বয়সী এক যুবক তার ১৯ বছর বয়সী নববিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে প্রাইভেটকারযোগে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরতে যান। এর আগে শাহপরান (রহঃ) মাজারও ঘুরে আসেন তারা। সন্ধ্যার পরে এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে তারা থামেন। এ সময় কয়েক যুবক ওই স্বামী ও তার স্ত্রীকে ঘিরে ধরে। এক পর্যায়ে প্রাইভেটকারসহ তাদেরকে জোরপূর্বক জিম্মি করে কলেজের ছাত্রাবাসের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। এরপর স্বামীকে আটকে রেখে ছাত্রাবাসের ৭ নং ব্লকের ৫ম তলা বিল্ডিং এর সামনে প্রাইভেটকারের মধ্যেই গৃহবধূকে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। তারা দম্পতির সাথে থাকা টাকা, স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আটকে রাখে তাদের প্রাইভেট কারও। ছাত্রাবাস থেকে টিলাগড় পয়েন্টে এসে যুবকটি পুলিশে ফোন দেন। পুলিশ আসতে বেশ সময়ক্ষেপণ করার সুযোগ পেয়ে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ নির্যাতিতাকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে। ওই রাতেই নির্যাতিতার স্বামী মাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জনকে আসামী করে শাহপরান থানায় মামলা করেন। শাহপরান থানার মামলা নং- ২১। তারিখ-২৬/০৯/২০২০। দেশের অন্যতম প্রচীন বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় দেশব্যাপী তুমুল আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণের সাজার আইনের পরিবর্তন করে মৃত্যুদন্ডের ঘোষণা দেয়। ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান করে জাতীয় সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল ২০২০ পাশ হয়। এ ঘটনায় এমসি কলেজের ছাত্র সাইফুর রহমান, মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসানকে কলেজ কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও এই ৪ জনের ছাত্রত্ব ও সার্টিফিকেট বাতিল করে।