সহকর্মীকে তালাক দেয়া সেই শিক্ষকের জামিন নামঞ্জুর
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি উচ্চবিদ্যালয়ে বিয়ে না করেই সহকর্মী শিক্ষিকাকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মৌলভী শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের (৫৬) জামিন আবারও নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন এই নামঞ্জুর করেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফয়সল আহমেদ জানান, বিয়ে বা কোনো ধরনের সম্পর্ক না থাকার পরও তার মক্কেল রিচি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কোহিনুর আক্তারকে নোটারি পাবলিকের নিকট এফিডেভিটমূলে তালাক প্রদান করেন আনোয়ার হোসেন। পরে আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী এই এফিডেভিটের কপি কোহিনুর আক্তারকে দিলে তিনি সেটি হাতে পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। এই এফিডেভিটের শত শত কপি এলাকায় বিলি করা হয়। এতে ওই শিক্ষিকার সন্তানদের বিয়ে নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়।
এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ওই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করে। অপরদিকে প্রতারণার শিকার হয়ে সামাজিকভাবে নিগৃহীত ওই শিক্ষিকা হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি এফআইআর গণ্যে রুজু করার আদেশ দিলে হবিগঞ্জ সদর থানার পুলিশ আনোয়ার হোসেন নামের ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে।গত ১৭ সেপ্টেম্বর তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হলে সোমবার পুনরায় জামিন চাওয়া হলে বিজ্ঞ বিচারক আবারও তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। শিক্ষিকা কোহিনুর আক্তার বিধবা। তার এক মেয়ে বিবাহিত ও এক ছেলে অবিবাহিত। পাঁচ মাস আগে আনোয়ার হোসেন নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে কোহিনুর আক্তারকে তালাক দেন। অথচ তাদের মাঝে কোনো বৈবাহিক সম্পর্ক নেই। এফিডেভিটের কপি আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী কোহিনুর আক্তারের নিকট দিয়ে তার স্বামীকে যাতে হয়রানি না করা হয় তার জন্য হুঁশিয়ারি দেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি আনোয়ার হোসেনকে শোকজ দিলে তিনি তার জবাবে বলেন, তার স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ ও সন্দেহপ্রবণ। স্ত্রীকে বুঝ দিতেই এফিডেভিট করে স্ত্রীর হাতে এনে দিয়েছিলেন। এই জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে সম্প্রতি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে।