বাউলদের ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সুনামগঞ্জ পৌরসভা
দৈনিকসিলেট ডটকম
‘প্রেমের মানুষ ঘুমাইলেও চাইয়া থাকে’ এমন বিখ্যাত গানের রচয়িতা বাউল জবান আলীসহ ১০ জন বাউলকে প্রতি মাসে ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সুনামগঞ্জ পৌরসভা।
পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত বাউলদের সেপ্টেম্বর মাসের সম্মানী ভাতা হাতে তুলে দিয়ে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
লোকসংস্কৃতির ‘রাজধানী’ হিসেবে খ্যাত সুনামগঞ্জ পৌর এলাকায় অসংখ্য বাউল রয়েছেন। যারা মানুষের মনের খোরাক ও সমাজের অসংগতি দূর ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে গান রচনা করেন। ভাটি অঞ্চলের এই শহরে বাউলদের কদর থাকলেও আর্থিকভাবে অসচ্ছল তারা। সুনামগঞ্জ পৌরসভা রেজুলেশনের মাধ্যমে এসব বাউলকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
পৌরসভার এই উদ্যোগে খুশি বাউলরাও। প্রবীণ বাউল তছকির আলী বললেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে পৌর মেয়র নাদের বখ্তের মহানুভবতায় তারা মুগ্ধ হয়েছে। এরকম উদ্যোগ জাতীয়ভাবে নেওয়া উচিত। সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র সূচনা করে দিলেন, এটি আরও ভালোভাবে কার্যকর করুক সরকার। এটিই চাই আমরা। জেলার সব বাউলের পক্ষ থেকে সুনামগঞ্জ পৌর মেয়রকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বাউল রশিদ উদ্দিন বললেন, বাউলরা যে পৌর পিতার কাছে অত্যন্ত সম্মানীত। এই সম্মানী ভাতা প্রদানে সেটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পৌর মেয়র নাদের বখ্ত বলেন, সাধক রাধারমণ, মরমি কবি হাসন রাজা, বাউল শাহ্ আবদুল করিমের দেশ হিসেবেই পরিচিত সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জের বাতাসে মিশে গেছে লোকসংস্কৃতি। এখানকার এমন মানুষ নেই, যারা বাউলদের লেখা গান সুযোগ পেলেই গুনগুনিয়ে গান না। সমাজ পরিবর্তনে ও সমাজের উন্নয়নে নিবেদিত এ বাউলরা আর্থিক কষ্টে ভোগেন সবসময়। রেজুলেশন পাস করে আমরা প্রতীকী সম্মানী দিয়ে শুরু করলাম। পৌরসভা যতদিন আছে, এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে সম্মানীর পরিমাণও বাড়বে।
নাদের বখ্ত জানান, পৌর এলাকার ইমাম-মুয়াজ্জিন ও মন্দিরের পুরোহিতগণ আগে থেকেই সম্মানী পেয়ে আসছেন। এবার শুরু হলো বাউলদের সম্মানী দেওয়া। সমাজের জন্য ইতিবাচক কাজে যুক্ত অন্যরাও পর্যায়ক্রমে পৌরসভার সম্মানীর আওতায় আসবেন বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার সম্মানী ভাতা পাওয়া ১০ বাউল হলেন– জবান আলী, তছকির আলী, রশিদ উদ্দীন, শফিক মিয়া, মিরাজ আলী, কানু দাস, জাকির হোসেন, আওয়াল মিয়া ও সৈয়দুর রহমান।