সার্বিয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাড়ে ৪ হাজার অভিবাসী আ-ট-ক
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
বলকান রুটের আলোচিত দেশ সার্বিয়ার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে অন্তত সাড়ে চার হাজার অনিয়মিত অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।
দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া এই অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন তিন অভিবাসী।
বুধবার (৮ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘২৭ অক্টোবর থেকে সার্বিয়ার উত্তরে হাঙ্গেরিয়ান সীমান্তবর্তী সুবোটিকা, সোম্বর ও কিকিন্দা পৌরসভায় এবং বুলগেরিয়ার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পূর্বের পিরোট শহরে পরিচালিত অভিযানে অন্তত সাড়ে চার হাজার অনিয়মিত অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, অভিযানে মানবপাচার, অস্ত্র ও মাদকসহ আট চোরাকারবারি ও ১১৯ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সার্বিয়া পুলিশ জানিয়েছে, টানা অভিযানে পাঁচটি অ্যাসল্ট রাইফেল, পাঁচটি হ্যান্ডগান, বিভিন্ন ক্যালিবারের এক হাজার ৫০০ রাউন্ডের বেশি গুলি, শতাধিক বিদেশি পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এই ১৪ দিনের অভিযানে ৮১ হাজারেও বেশি গাড়ি এবং ৩০০টিরও বেশি বাড়িতে অনিয়মিত অভিবাসন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বিরোধী তল্লাশি চালানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ‘অনিয়মিত অভিবাসনের সমস্যার সমাধান না হওয়া এবং মানবপাচার নেটওয়ার্কগুলো ভেঙে না দেওয়া পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযান অব্যাহত রাখবে।’
আটক হওয়া অভিবাসীদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্য, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তারা তুরস্ক, বুলগেরিয়া, উত্তর মেসিডোনিয়া এবং সার্বিয়ার মধ্যে দিয়ে বিস্তৃত অভিবাসন রুট ব্যবহার করেন বলে জানিয়েছে বেলগ্রেড কর্তৃপকক্ষ।
অনেক অনিয়মিত অভিবাসী মানব পাচারকারীদের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের সাহায্যে সীমান্ত অতিক্রম করে। মানবপাচার চক্রগুলো অনেক সময় সশস্ত্র থাকে। এছাড়া সীমান্তে অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
গত মাসে হাঙ্গেরির সঙ্গে সার্বিয়ার সীমান্তের কাছে বন্দুকযুদ্ধে তিন অভিবাসী মারা যান। ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের জন্য মানবপাচারকারী ক্রমবর্ধমানভাবে এই রুটটিকে ব্যবহার করেন।
সার্বিয়ার সেন্টার ফর প্রোটেকশন অ্যান্ড অ্যাসিসট্যান্সের পরিচালক রাডোস জুরোভিচ স্থানীয় আরটিভি টিভিকে বলেন, এগুলো সংগঠিত গ্যাং। অভিবাসী জনগোষ্ঠীদের সদস্যরাও ছাড়াও আমাদের স্থানীয় নাগরিকেরা সীমান্তে লোকদের স্থানান্তর করে এবং বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে চায় সার্বিয়া। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় আছে দেশটি। অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে দেশটি ইইউ সদস্য দেশ হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যৌথ সীমান্ত টহল পরিচালনা করে আসছে।
সার্বিয়া থেকে পশ্চিম ইউরোপের দিকে পরিচালিত অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রবাহ ঠেকাতে ভারত ও বুরুন্ডিসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে থাকা ভিসানীতি আরও কঠোর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেলগ্রেড।