বেদখল খোয়াই মরা নদী, পরিষ্কারের উদ্যোগ ব্যারিষ্টার সুমনের
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১ হাজার গজ প্রস্থের মরা খোয়াই নদীটি দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। এরশাদ সরকারের আমল থেকে নদীটি দখলদারদের কবলে রয়েছে। প্রভাবশালী দুই মন্ত্রী, দুই উপজেলা চেয়ারম্যান, তিন মেয়র দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু কেউই দখলমুক্ত করতে পারেননি।
হবিগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসনে এমপি মাহবুব আলী পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসার পর মরা খোয়াই নদীকে দখল মুক্ত করে একটি বিনোদন পার্ক নির্মাণের দাবি সর্বমহল থেকে ওঠে। ১ কোটি টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই অর্থ সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান উন্নয়ন খাতে চলে যায়। খোয়াই মরাই থেকে যায়। জীবিত করা যায়নি দখলদারদের চাপের মুখে। ২০১৫-১৬ সালে নদী ভরাট করে পুলিশ একাডেমি করার জন্য তৎক্ষালীন উপেজলা চেয়ারম্যান আবু তাহের সঙ্গে নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন হবিগঞ্জের তখনকার পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র। সে কার্যক্রমও থেমে যায় দখলদারদের কারণে। এদিকে গত রোববার থেকে মরা খোয়াই নদীর আবর্জনা স্বেচ্ছাশ্রমে পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন নবনির্বাচিত এমপি সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
দখলের কাতারে রাজনৈতিক নেতা, আমলাসহ নানা পেশার মানুষ জড়িত।
উপজেলার বড়াইল, পশ্চিম পাকুড়িয়া, গুচ্ছগ্রামসহ চুনারুঘাট সদরের নদীর আশপাশের বাসিন্দা ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানের প্রভাবশালীরা এসে নদীতে মাটি ভরাট করে অবৈধভাবে স্থাপনা ও দোকানপাট নির্মাণ করেছেন। দখলদারদের কারণে নদী তীরে অবস্থিত বধ্যভূমিটিও সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। নদীর পাড়ে দক্ষিণা চরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। অধুনা নির্মিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। নদীর চারপাশ এখন দখলদারদের পেটে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, দখলদাররা এতটাই ক্ষমতাধর যে তাদের উচ্ছেদ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। শুষ্ক মৌসুমেই বেড়ে যায় নদী দখলের প্রবণতা। প্রথমে ময়লা আবর্জনা ফেলে স্তূপ করে রাখা হয় পরে ওই স্থানটিকে দখলে নেয় দখলদাররা।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র সাইফুল আলম রুবেল বলেন, পৌরসভা কর্তৃক বর্তমানে এখানে ময়লা ফেলা হয় না। মরা খোয়াই নদীর দুই ব্রিজের পাশে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে পৌরসভার উদ্যোগে সাইনবোর্ডও দেয়া হয়েছে। কেউ ময়লার ভাগাড়ে আগুন না দেয় সেদিকেও নজর রাখা হয়েছে। তারপরও কারা ময়লা ফেলছে তা পৌর কর্তৃপক্ষের জানা নেই। ইউএনও নীলিমা রায়হানা জানান, জনসমাগম ঘটে এমন এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা পরিবেশসম্মত নয়। তবে দ্রুত ময়লা-আবর্জনা অপসারণে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে। উপজেলা চেয়ারম্যান আ. কাদির লস্কর বলেন, মরা খোয়াই নদীকে পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হয়নি।