জমে ঊঠেনি বিয়ানীবাজারে ঈদবাজার
মিসবাহ উদ্দিন, বিয়ানীবাজার
মুসলমান দের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর আর এই ঈদ কে ঘিরে নিজেকে বর্ণিল সাজে সাজাতে নতুন কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকেন সবাই, রমজানের শেষদিকে ব্যস্ত সময় পার করেন ব্যবসায়ি ও ক্রেতারা তবে এবারের ঈদ বাজার এখনো জমে ঊঠেনি চড়া দাম ও ক্রেতা কম থাকায় অনেকটা দু চিন্তায় ব্যবসায়ীরা । আর মাত্র কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে ঈদ উৎসব ঘিরে বিয়ানীবাজার পৌরশহরসহ উপজেলার অন্যান্য বাজারের বিপণিবিতানগুলো এখনো জমে ওঠেনি। বড় বড় মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বাহারি ঈদ পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসলেও কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
যদিও বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের বেচাকেনা না বাড়লেও আগের চেয়ে ভিড় বেড়েছে। হয়তো প্রবাসীরা এখনো টাকা পাঠানো শুরু করেননি। সাধারণত ঈদের সপ্তাহখানেক আগে থেকে বিয়ানীবাজারে ঈদের কেনাকাটা জমে ওঠে।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বড় বড় মার্কেট, শপিংমলে ক্রেতা উপস্থিতি কম দেখা গেলেও অনেকে ছুটছেন সিলেট শহরে। কারণ পৌরশহরে ঈদের পণ্যের দাম চড়া। তাই একটু আগেভাগেই তারা সিলেটমুখি হয়েছেন। ফরহাদ নামের এক তরুণ ক্রেতা জানান, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিলেট শহর থেকে কেনাকাটা করেছেন। বিয়ানীবাজারে পন্যের মানের তুলনায় দাম বেশী। তাই গত ২-৩ বছর থেকে তিনি স্থানীয় মার্কেট থেকে কেনাকাটা বন্ধ করে দিয়েছেন।
পৌরশহরের জামান প্লাজায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্টান ফাঁকা। সন্ধ্যার পর কেনাকাটা জমে ওঠার কথা থাকলেও এবার সেই প্রবণতা দেখা যায়নি। অলস সময় কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কাপড় ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান বলেন, ‘ব্যবসা খুবই খারাপ। গত বছর আরও খারাপ ছিল। এই সময়টাতে ক্রেতা সরগরম থাকে। এ বছর তেমনটা দেখা যাচ্ছে না।’
বিয়ানীবাজারের বিপনী বিতানগুলো সোয়াবাতের ফ্রক, গাউন, থ্রিপিস এবং পাকিস্তানি নূর, তাওক্কাল, কারিজমা ব্রান্ডের থ্রিপিস দিয়ে সাজানা হয়েছে। নারীদের ফ্লোরটার্চ, আনারকলি, মাসাজকালি, লেহেঙ্গা, আফসানা ও উরকে চলেসহ বাহারি সব নামের থ্রি-পিস আর বাহারি পোশাকের সাজ সজ্জা শোভা পাচ্ছে দোকানে ও শপিং মলে।
শুধু তাই নয়, কুশাল, খানসা, আবগজেব, কাশমিরি, সুলতান, বিবা কালেকশন, পার্টি, সামছিসহ পুরুষের পাঞ্জাবিতেও রয়েছে রকমারি নাম। এছাড়াও ঈদ আয়োজনে ছেলেদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়া, কটি। মেয়েদের জন্য থাকছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, ফতুয়া, টপস, স্কার্ফ। পাশাপাশি পাবেন কিছু হাতে বানানো জুয়েলারিও। শিশু-কিশোরদের আয়োজনে ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট আর মেয়েদের জন্য রয়েছে টপস, ফ্রক, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের হাজী আব্দুস সাত্তার শপিং কমপ্লেক্স, আজির প্লাজা, আল-আমিন সুপার মার্কেট ছাড়াও অন্যান্য বিপনী বিতানগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে ক্রেতা আসছেন। কেউ দেখছেন আবার কেউ চুপচাপ ফিরে যাচ্ছেন।
নার্গিস বেগম নামের এক ক্রেতা বলেন, ছোট ছেলের জন্য ৩৫০ টাকায় একটি পাঞ্জাবি কিনেছি। এবার সব জিনিসের দাম অনেক।
বিক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের মত এবার বিভিন্ন কার্টুন চরিত্র, ভারতীয় স্টার প্লাস, স্টার জলসা ও জি বাংলা চ্যানেলের সিরিয়ালের নায়ক-নায়িকাদের নামে পোশাকের নামকরন থাকলেও তাতে ক্রেতাদের আকর্ষণ নেই। এবার আশিকি-২, কৃশ-৩, আনার কলি, মাসাককলি, চুনরি, জমিন, ইশাকজাদে, বিপাশা, জারা, রাধিকা, অর্চনা, আমিত, ডিসকো চলি, ফুলকি, খুশি, রাশি, কোয়েল, চিকনি, চামেলি সালোয়ার-কামিজ বিপনী বিতানগুলোতে বিক্রির জন্য তোলা হলেও তা তেমন চলছেনা।
বিয়ানীবাজার চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এনাম উদ্দিন বলেন, এখনো মার্কেট তেমন জমে ওঠেনি। সাধারণত ঈদের শেষ ১০ দিনে বাজার জমে ওঠে। এবারও তাই হবে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদে শুধুমাত্র জামা-কাপড় ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে।