গোলাপগঞ্জে প্রবাসীকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় নারীসহ গ্রেপ্তার ৪
জাহিদ উদ্দিন
সিলেটের গোলাপগঞ্জ থেকে এক প্রবাসী যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় নারীরসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ গত দুই দিনে অভিযান চালিয়ে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, প্রথমে অপহরণের মূলহোতা সুবর্না আক্তার লাকিকে নগরীর একটি হোটেল থেকে ও পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের গ্রেপ্তার করে। এরা হচ্ছে সিলেটের বালাগঞ্জের রাঁধাকোনা গ্রামের আখল মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা আক্তার লাকী (৩২), তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সিলেট সদর উপজেলার শাহপরান এলাকার মোকামেরগোল গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম রুবেল (২৭), ওসমানীনগরের দক্ষিণ রাইকদাড়ার আতিক মিয়ার ছেলে জাহেদ আহমদ (৩৮) ও একই গ্রামের আফজল আলীর ছেলে সুমন রশীদ (৩৩)।
সোমবার রাতে সিলেট জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৮ মার্চ গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ এলাকার সদ্য প্রবাস ফেরত যুবক সোহেল আহমদকে গোলাপগঞ্জ চৌমুহনা থেকে অপহরণ করা হয়। ওইদিন তিনি রামদা বাজার যাওয়ার পথে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠলে ছদ্মবেশী প্রতারক চক্রের সদস্যরা তাকে মুখে স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে সিলেট নগরীর দিকে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাইভেটকার নিয়ে অবস্থান করেন সুবর্না আক্তার লাকি। লাকি তার সহযোগীদের নিয়ে প্রবাসীকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর এলাকায় সহযোগী বাচ্চু ও বুলবুলের বাড়িতে নিয়ে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখেন। এরপর সুমন রশীদ, বাচ্চু মিয়া ও বুলবুল মিলে সোহেল আহমদের হাত-পা, চোখ বেঁধে মারধর করেন। হত্যার হুমকি দিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। তখন সোহেল আহমদ প্রাণে বাঁচতে তার নিকট আত্মীয়দের সহায়তায় ৯২ হাজার টাকা মুক্তিপণ প্রদান করেন। ওইদিন রাত ২টার দিকে সোহেল আহমদের চোখ-মুখ বেঁধে তার পরনে থাকা কেডস, ঘড়ি, মোবাইল ফোন ও বিদেশি আংটি খুলে রেখে কয়েক কিলোমিটার দূরে তাকে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারী।
গত ৩ এপ্রিল প্রবাসী সোহেল আহমদ গোলাপগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন। গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ মুক্তিপণ আদায়ে ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে গত রোববার ও সোমবার তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে সোহেল আহমদের কেডস, ঘড়ি, মোবাইল ফোন ও বিদেশি আংটি উদ্ধার করে।
গোলাপগঞ্জ থানার ওসি মাছুদুল আমিন জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ কাজে ১০ থেকে ১২ জন সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে বলে জানায় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা। তারা বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানকালে প্রবাস ফেরত যুবকদের টার্গেট করে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল।