যেকারণে বৃষ্টি চান না হাওরের কৃষকরা

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
হাওরের একমাত্র প্রধান ফসল বোরো ধান। বছরে একবারই ধান হয় এখানে। বছরের প্রায় আট মাসই পানির নিচে থাকে হাওর এলাকা। শুষ্ক মৌসুমে পানি নামলে বোরোর আবাদ করা হয়। বৈশাখে এ ফসল ঘরে তোলা হয়। এ ধান থেকেই আসে হাওর পাড়ের তথা দেশের মানুষের একটি অংশের খাদ্যের জোগান। প্রায় বছরই অকাল বন্যা কিংবা অতিবৃষ্টির কারণে ধান তলিয়ে যায়। তবে এবার তেমন বৃষ্টি হয়নি, ঢলও নামেনি। উল্টো চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাই কৃষকরা চান আরও কয়েকটা দিন রৌদ্রমুখর থাকুক দিনগুলো।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার ছোট-বড় ১৩৭টি হাওরে এবার ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০০ টন। এবার ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খড়চার হাওরের কৃষক মনফর আলী বলেন, আমরা এবার অনেক খুশি ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। অন্যবার বন্যা-বৃষ্টির চোখ রাঙানি থাকত, কিন্তু এবার কিছুই নেই। আবহাওয়া আমাদের পক্ষে। এখন গরম লাগছে কিন্তু আমাদের ধানের জন্য ভালো। ধানগুলো পরিপূর্ণভাবে শুকিয়ে গোলায় তুলতে পারব। অন্য বছর ধান কাটার পর বৃষ্টি হতো বা ধান কাটতে হতো বৃষ্টিতে ভিজে, কিন্তু এ বছর বৃষ্টি নেই। আমরা চাই আরও কয়েকটা দিন এভাবে গেলে আমরা ধান শুকিয়ে ফেলতে পারব। এখন গরম লাগলেও বৃষ্টি চাই না আমরা।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন জানান, আমি সুনামগঞ্জের একদম সীমান্তবর্তী প্রান্তিক উপজেলা তাহিরপুরে কাজ করছি। আমি প্রথম থেকেই কৃষকদের ধান চাষের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখছি। যাতে কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই কৃষক ধান ফলাতে পারে। সার বীজে যেন কোনো প্রকারে কারসাজি না হয় সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন খুবই সতর্ক ছিল। অনেক গৃহস্থের ধান ইতিমধ্যে গোলায় উঠে গেছে। গরমের মধ্যে আমরা কষ্ট করলেও চাই যে ধান টা উঠে যাক। এখন যেন বৃষ্টি না হয়। সেই কামনা করছি। আশা করছি আরও কয়েক দিনের মধ্যে ধান সব কৃষকের গোলায় উঠে যাবে। পরে হাওরে পানি এলে বা বৃষ্টি হলে কোনো সমস্যা হবে না।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, প্রায় ৭৩ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হাওরের ধান কাটা মোটামুটি শেষ হয়ে যাবে। ধান কাটায় কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ।