শাবিতে ছাত্রলীগ কর্মীকে হলছাড়া ও সিট দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ
![](https://dainiksylhet.com/images/icon.jpg)
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
ছাত্রলীগের তিনকর্মীর ব্যক্তিকেন্দ্রীক রাজনৈতিক মতাদর্শ পরিবর্তন ও বৈধ শিক্ষার্থীদেরকে হলছাড়া করা নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে মূলত কক্ষ দখলের উদ্দেশ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী গ্রুপের নেতা-কর্মীদের।
গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মে) রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ২২৩ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হুদার দখলে থাকা ওই হলের একটি কক্ষ সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমানের অনুসারীরা হস্তক্ষেপ করতে চাইলে দুপক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাধে। তবে এতে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, সজিবের অনুসারী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক, শিমুল মিয়া, আয়াজ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহান চৌধুরী আরিয়ান ও সজিবের অনুসারী রাকায়েত হোসেন নাবিল ও সানি শেখ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শুভ’র অনুসারীদের ওপর হামলা করে। এতে নাজমুল হুদার শুভর অনুসারীরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে মধ্যরাতে হলজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
ঘটনার বিষয়ে নাজমুল হুদার অনুসারী সাজ্জাদুল ইসলাম সিফাত বলেন, শাহপরাণ হলের ২২৩ নম্বর কক্ষে আমাদের দলের কর্মীরা থাকে। স্বাভাবিকভাবেই যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে যার রাজনীতি করে, সে ওই গ্রুপের আওতাভুক্ত রুম গুলোতেই থাকে। কিন্তু ২২৩ ওই রুমের বাসিন্দা ৩জন শিক্ষার্থী প্রথম থেকেই নাজমুল হুদা শুভ’র রাজনীতি করত। তবে সম্প্রতি তারা সজিবের রাজনীতি করে। তাই ওদেরকে আমরা সিনিয়র কয়েকজন গিয়ে রুম থেকে চলে যেতে বলি। আরও বলেছি যে, তারা যার(সজিব) রাজনীতি করে তার রুম গুলোতে যেন চলে যায়। কিন্তু তারা না গিয়ে উল্টা সজিবের কর্মীদের ডেকে আনে। তারা এসে আমাদের ওপর চড়াও হয়।
তিনি আরও বলেন, এসময় আমাদের গ্রুপের ইন্টারনাল বিষয়ে তোমরা (সজীবের কর্মীদের) কেন নাক গলাচ্ছো এমন প্রশ্ন করলে তারা (সজিবের কর্মী) বলেন, এটা আর আপনাদের গ্রুপের বিষয়ে নাই। এটা এখন সজিব ভাই গ্রুপের বিষয় হয়ে গেছে। এমন সময় আমার একটা কল আসলে আমি বাহিরে আসি। এই সময়ই সজিবের কয়েকজন কর্মী আমাদের কয়েকজন কর্মীকে মারধর করেন বলেন জানান তিনি।
ঘটনার অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমানের অনুসারী সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহান হোসেন চৌধুরী আরিয়ান বলেন, রুমে যাওয়ার পথে শোরগোল দেখে আমি সেখানে যায়। তবে আমার বিষয়ে মারধরের যে অভিযোগ তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ বিষয়ে নাজমুল হুদা শুভ বলেন, এটা আমার গ্রুপের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ওই রুমের সকলেই আমার অনুসারী। তারা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। তাই তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হতে বলেছি। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমানের অনুসারীরার বাধা দেয়। আমার অনুসারীদের উপর হামলা করে। তারা কক্ষে অবস্থান করা আমার অনুসারীদের প্রভাবিত করে কক্ষ দখলে নিতে চায়।
এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান বলেন, নাজমুল হুদা শুভর গ্রুপের কর্মীদের ইন্টার্নাল সমস্যা হয়েছিল। আমি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেই। তার অনুসারীরা ওই রুমে গিয়ে হামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এসব মিথ্যা কথা। এতে কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট স্থপতি কৌশিক সাহা বলেন, গতকাল রাতে গোলযোগ দেখে প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করব। প্রশাসন নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন। ওই রুমের সকলেই বৈধ শিক্ষার্থী। তারা এখন রুমে অবস্থান করছে।