ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন আহমাদিনেজাদ

দৈনিকসিলেটডেস্ক
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক দু’বারের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। সম্প্রতি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর আগামী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর ইরান ইন্টারন্যাশনালের
আহমাদিনেজাদ সমর্থকদের মাধ্যমে পরিচালিত দোলাত বাহার টেলিগ্রাম চ্যানেলে গত শনিবার এ নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। এতে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী ‘পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পরিবর্তন হচ্ছে।’
আহমাদিনেজাদ বলেন, ‘শুধু ইরানে নয়, বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। আমি আশাবাদী, আমরা শিগগির ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পাব।’
আগামী ২৮ জুন ইরানে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এদিকে সংসদে আহমাদিনেজাদ সমর্থকরা এরই মধ্যে তাঁর সম্ভাব্য প্রার্থিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, আহমাদিনেজাদ ‘দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।’
ইরানিয়ান লেবার নিউজ এজেন্সিকে পার্লামেন্টে তাবরিজের প্রতিনিধি আহমেদ আলিরেজা বেগি বলেছেন, ‘মাহমুদ আহমাদিনেজাদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তিনি জয়ী হবেন।’
তিনি সমালোচনা করে বলেন, আহমাদিনেজাদকে ২০১৭ ও ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। অভিভাবক পরিষদ দ্বারা এটি করা হয়েছিল, যা মূলত প্রধান ধর্মীয় নেতা আলি খামেনি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল।
তবে তিনি মনে করেন, আহমাদিনেজাদকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, অভিভাবক পরিষদ তাঁকে প্রার্থিতার জন্য অনুমোদন দেবে। আবেদন করার পর অযোগ্য ঘোষণা করা হলে এর পরিণতি ভালো হবে না।
২০১৭ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পর রাষ্ট্রীয় পদ্ধতির চরম সমালোচক হয়ে ওঠেন আহমাদিনেজাদ। শুধু তাই নয়, তিনি খামেনির সমালোচনাও প্রকাশ্যে করেন। তবে তিনি গত দুই বছর ধরে চুপ রয়েছেন। যাতে করে সর্বোচ্চ নেতার ঘনিষ্ঠ অনুগতদের বিরাগভাজন না হতে হয়।
নির্বাচনের বিষয়ে ইরানের বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মোরাদ ভাইসির মত, ইরান তৃতীয় পর্বে প্রবেশ করতে চলেছে। ইরান ইন্টারন্যাশনালকে ভাইসি বলেন, প্রথম পর্বটি ছিল বাম বনাম ধর্মীয় ডানপন্থি; দ্বিতীয় পর্বটি ছিল মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে সংস্কারবাদী। তৃতীয় ধাপে সামরিক ও নিরাপত্তাকর্মীরা জড়িত।
তাঁর ধারণা, এই নির্বাচনে অন্য কোনো দলকে প্রার্থী হতে দেখা যাবে না। এটা সম্ভবত সামরিক ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টদের মধ্য থেকে কেউ হবে।’
আহমাদিনেজাদ ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এর আগে তিনি তেহরানের মেয়র ছিলেন। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন। দেশের পারমাণবিক কর্মসূচির পক্ষেও তাঁর জোরালো অবস্থান ছিল।