বিয়ানীবাজারে এখনো বসে নি কোরবানির পশুর হাট
![](https://dainiksylhet.com/images/icon.jpg)
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি
চলতি মাসের ১৭ মে উদ্যাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ইতোমধ্যে বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। তবে এবার বিয়ানীবাজারে মোট কতটি পশুর হাট বসবে তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। যদিও অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর জন্য মোট ৮টি আবেদন জমা পড়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদগুলো পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম জানান, আজকালের মধ্যে অস্থায়ী পশুর হাট বসানো নিয়ে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে।
সূত্র জানায়, উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ পশুর হাট বসে পৌরশহরের পিএইচজি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। এই মাঠের সার্বিক তত্বাবধানে রয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তবে গত কয়েকবছর থেকে উপজেলার প্রধানতম এই মাঠের ইজারা নিয়ে অনিয়মের নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য মানুষের মুখে মুখে। এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিকুঞ্জ ব্যনার্জি বলেন, হাট-বাজারের নিলাম নিয়ে বাইরে সিন্ডিকেট থাকতে পারে। তবে আমরা আইনানুযায়ী সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি।
একই সূত্রের দাবী, উপজেলার স্থায়ী পশুর হাটগুলো নিলামের ক্ষেত্রে পৃথক সিন্ডিকেট প্রশাসনের উপর প্রভাব বিস্তার করে। তারা নিজেদের মধ্যে রফাদফা করে নিলামে অংশ নেয়। পরে একজনের নামে নিলাম প্রাপ্ত হয়ে তারা সবাই ভাগ-বাটোয়ারা করে। নিলাম সিন্ডিকেটের কারনে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এদিকে খামারিরা বলছেন, গত কয়েক মাসে সব ধরনের গোখাদ্যের দাম কেজিতে ৭-১০ টাকা বেড়েছে। গত ৪ মাসে প্রতি কেজি গমের ভুসিতে ৮ টাকা, বুটের খোসায় ১০ টাকা, চালের খুদে ৭ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া চালের খুদ ও দানাদার ফিডে ৮-৯ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি খামারের গরুর চিকিৎসা ব্যয়, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ পরিচালন ব্যয় বেড়েছে। যার কারণে এ বছর প্রতি গরুতে ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পাবে। দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে খামারে ঘুরতে আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আগ্রহ এখন ছোট গরুর প্রতি বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় খামারী বাবু বলেন, আমাদের খামারে একটা গরু সংগ্রহ করার পর প্রথমে চিকিৎসক দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। অনেক গরুর কিছু রোগ থাকে, সেগুলোর চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা ব্যয়ও বেড়েছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে খামার পরিচালনার ব্যয়ও বেড়ে গেছে। ফলে, এবার কোরবানিতে গরুর দাম বাড়বেই, উপায় নেই।
স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য বিয়ানীবাজার উপজেলায় ১৪ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুগুলো যাতে সুস্থ সবল থাকে এবং রোগাক্রান্ত পশু যাতে বিক্রি করতে না পারে তা নিশ্চিতে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।
খামারিরা বলছেন, বর্তমানে বিয়ানীবাজার উপজেলায় যে পরিমাণ পশু রয়েছে তাতে চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। কারণ তালিকাভূক্ত খামারিদের বাইরেও ব্যক্তি ও পরিবার পর্যায়ে অনেকেই কোরবানির জন্য দুই/একটি পশু লালন-পালন করে থাকেন। সেই হিসেবে তাদের কাছেও প্রচুর কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একেএম মোক্তাদির বিল্লা বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির পশুর চাহিদা বাড়ছে। সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করে গরু হৃষ্ট-পুষ্টকরণে খামারিদেরকে উৎসাহিত করার জন্য এবং এ কার্যক্রমে রাসায়নিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মাঠপর্যায়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।