স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডন গিয়ে একের পর এক প্রতারণা এক নারীর
দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিলেটে সম্পর্ক থেকে বিয়ে। পরে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে যাত্রা। যে মানুষটির জন্য তার বিদেশ যাওয়া হয়েছিল সেই মানুষটিকে ঠকিয়েছেন শারমিন আক্তার সীমা নামে এক নারী। শুধু ঠকাননি, তার বাসা থেকে স্বর্নালঙ্কার ও পাউন্ড চুরি করে পালিয়ে যান অন্যত্র। পালিয়ে গিয়েও কান্ত হননি তিনি। ডিভোস না দিয়ে আরেক যুবককে বিয়েও করেন। অভিযোগ উঠেছে তার সাথে একইভাবে প্রতারণা করে আবার অন্যত্র পালিয়ে গেছেন তিনি। সম্পর্ককে জাড়াচ্ছেন আরও যুবকদের সাথে। এ নিয়ে দেশে বিদেশে কানাঘুষা চলছে। ইতোমধ্যে সীমার প্রতারণার বিষয়টি হোম অফিসকে অবগত করেছেন ভুক্তভোগীরা। এমনকি সীমাও অভিযোগ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। আলোচিত নারী সীমা সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগরের শাহজাহান মিয়ার মেয়ে।
বিয়ের কাবিনসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে জানা গেছে ২০২০ সালে ফেসবুকে সীমার সঙ্গে পরিচয় হয় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুর রহমানের। সীমা নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তার পিতা একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিতেন। কিন্তু বাস্তবে তার পিতা ছিলেন খাদিম বিসিকের একটি খাদ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মচারি। সম্পর্করে পর ২০২১ সালের ৮ জুন সীমাকে বিয়ে করেন সাইফুর। ইমিগ্রেশন জটিলতায় স্পাউস ভিসায় সীমাকে যুক্তরাজ্যে নিতে না পেরে ৬ মাস পর ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি স্টুডেন্ট ভিসায় সীমাকে যুক্তরাজ্যে নেন সাইফুর। এতে ৫০-৬০ লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর সীমা পুরোদমে বদলে যান। সম্পর্কে জড়ান আরেক ব্যক্তির সাথে। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে সীমা ২০২২ সালের আগস্টে বাসার সকল দামি জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যান। পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে এবং তাকে তালাক না নিয়ে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি হাবিবুর রহমান নামের আরেক যুবকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সীমা। কিন্তু সেখানেও বেশিদিন সংসার ঠিকেনি তার। আশ্রয় নেন অন্যত্র। সম্পর্কে জড়ান আরও এক যুবকের সাথে। এ নিয়ে দেশে বিদেশে উভয় পরিবারসহ পরিচিত জনদের মধ্যে চলছে কানাঘুষা। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় সীমা তার সম্পর্কে নানা শফিক নামে এক ব্যক্তির পরামর্শে নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। চলতি বছরের ১৯ মার্চ সীমা বেথনাল গ্রিন পুলিশ স্টেশনে হাবিুবের বিরুদ্ধে রিপোট করেন। একসাথে দুই স্বামী রাখায় তার বিরুদ্ধে হোম অফিসে রিপোট করেন হাবিবও। একই অভিযোগে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় হোম অফিসে রিপোট করেন সাইফুর।
প্রতারণা বিষয়ে জানতে সীমার লন্ডনের মোবাইল ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার পিতা শাহজাহান মিয়া মেয়ের প্রতারণার বিষয়টি মানতে নারাজ। তিনি উল্টো অভিযোগ করে গণমাধ্যমকে জানান সাইফুরের সাথে বিয়ে ও লন্ডনের যাওয়ার জন্য সকল খরচ তিনি দিয়েছেন। সাইফুর ও তার পরিবার সীমাকে নির্যাতন করায় তাদের বাসা থেকে চলে যায়। হাবিবকেও তিনি দোষারুপ করে। তারা লন্ডনে সীমাকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে দাবি করেন শাহজাহান।