প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের নিদর্শন খেরুয়া মসজিদ
বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খন্দকার টোলা গ্রামে অবস্থিত খেরুয়া মসজিদ। ১৫৮২ সালে নির্মিত এ মসজিদটি আজ থেকে প্রায় ৪৩৭ বছর পূর্বে তৈরি হয়। যা বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত রয়েছে। মসজিদটি নির্মাণ করেন মোগল সেনাপতি মির্জা মুরাদ খান কাকশাল।
যদিও স্থানীয়ভাবে নির্মাতা হিসেবে আব্দুস সামাদ ফকির এর নামও আলোচিত। তবে মসজিদের মূল ফটকের দেয়ালে উৎকীর্ণ শিলালিপিতে মির্জা মুরাদ খানের নাম থাকায় তাকেই নির্মাতা হিসেবে ধরা হয়। খেরুয়া মসজিদ মূলত চুন, সুরকি ও কৃষ্ণ পাথর দিয়ে নির্মিত। এখানে কোনো রড, সিমেন্ট বা বালির ব্যবহার করা হয়নি।
মসজিদটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এর তিনটি সমান আকৃতির গম্বুজ। এর দৈর্ঘ্য ১৭.২৭ মিটার, প্রস্থ ৭.৪২ মিটার এবং দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ১.৮১ মিটার। ভিতরে রয়েছে তিনটি কারুকার্যময় মেহরাব। পূর্ব দেয়ালে তিনটি, উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে দরজা রয়েছে।
বর্তমানে শুধু পূর্বদিকের দরজা ব্যবহারযোগ্য। মসজিদের চারপাশে রয়েছে সুউচ্চ দেয়াল ও সবুজ গাছগাছালির ঘেরা পরিবেশ। মসজিদের আয়তন ৫৯ শতক জমি। যার একটি অংশ খালি মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং ঈদের জামাতও সেখানে অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের উত্তর-পশ্চিম কোণে রয়েছে ওযুখানা এবং সামনের মাঠে অবস্থিত আব্দুস সামাদ ফকির এর কবর। খেরুয়া মসজিদে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও শুক্রবারের জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৯০ জন মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন।
যাতায়াত
ঢাকা থেকে মসজিদটির দূরত্ব প্রায় ১৬৬ কিলোমিটার, বগুড়া থেকে ২৮ কিলোমিটার ও শেরপুর উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার। শেরপুর থেকে রিকশা, ভ্যান বা সিএনজি করে সহজেই মসজিদে পৌঁছানো যায়। রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, শ্যামলী, কল্যাণপুর ও আবদুল্লাহপুর থেকে প্রতিদিন বগুড়াগামী বিভিন্ন পরিবহন চলাচল করে। সূত্র : কুহুডাক