দোয়ারাবাজারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকট এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের ঘিলাছড়া গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন’র স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নরসিংপুর বাজার সংলগ্ন মরা চেলা নদী থেকে ঘিলাছড়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিনের পুত্র আজির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি চক্র অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে নদীর তীরবর্তী ঘরবাড়ি ধ্বসিয়ে ফেলার উপক্রম করেছে।
অভিযোগে তিনি বলেন, তার পূর্বপুরুষ থেকে ঘিলাছড়া গ্রামে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছেন। অভিযুক্ত আজির উদ্দিনের নেতৃত্বে বালুখেকো চক্র তাদের বসতঘরের পিছনের মরা চেলা নদী থেকে আজ প্রায় ৩ মাস যাবত অবৈধ ভাবে উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। বালু উত্তোলনের কারনে এলাকার ১৩/১৪টি ঘরবাড়ি ধ্বসিয়ে যাবার শঙ্কায় একাধিকবার বাঁধা নিষেধ করলে কিছু দিন বালু উত্তোলন বন্ধ রাখে আজির উদ্দিন। কয়েকদিন পর বহু সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে অবৈধভাবে আবারো জোরপূর্বক বালু উত্তোলন শুরু করে। যার কারণে ঘিলাছড়া গ্রামের বেশ কযেকটি বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। বালু উত্তোলনের ফলে যে কোন সময় চেলা নদীতে এসব ঘর-বাড়ি বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে একাধিকবার বাঁধা নিষেধ দেওয়ার পরও আজির উদ্দিন স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে কারো কথার তোয়াক্কা না করে ব্যপরোয়া ভাবে যথারীতি বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। স্থানীয়রা বাধা নিষেধ দিলে সে প্রশাসনের দোহাই দিয়ে বলে আমি প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বালি উত্তোলন করিতেছি তোমাদের অসুবিধা কি?
তিনি জানান, এমতাবস্থা চলতে থাকলে ঘিলাছড়া গ্রামের ১৩/১৪টি বসতঘর বাড়িসহ চেলা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়াসহ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকট এ অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুধু ঘিলাছড়া নয়, নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক, সুনাইত্যা ও শ্রীপুর গ্রামের বিভিন্ন জায়গা হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছে একটি চক্র। তাদের ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারেনা। চক্রটি প্রশাসনের নাম বিক্রি করেও বালু সরবরাহ করে। যদিও স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে বেশ কয়েকটি বালুবর্তি গাড়ি ও জড়িত কয়েকজনকে ইতোপূর্বে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবুও থেমে নেই তারা।
এবিষয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুপ রতন সিংহ জানান, নরসিংপুরের অভিযোগটি পেয়েছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, বালু উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি গাড়ি ও তার বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। যে বা যারাই করছে,প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে করছে।