স্তনে চাকা এবং রোগীর এ সময় করণীয়
দৈনিক সিলেট ডট কম
ডা. এটিএম কামরুল হাসান:ধীবিশ্ববাসী এখন করোনা ভাইরাসে ভীত। এটি মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ। করোনা ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সুস্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে জীবাণুটি। ঢোকা মানেই সঙ্গে সঙ্গে রোগের উপসর্গ ফুটতে আরম্ভ করবে। কারোর ক্ষেত্রে দিন দুয়েক, আবার কারোর ক্ষেত্রে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে উপসর্গগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে এবং ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাই তাদের জন্য রোগটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। রোগ প্রতিরোধে তাই নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।
স্তনের চাকা বা পিন্ডের সমস্যাটি স্তন ফুলে যাওয়া বা স্তনের সিস্ট নামে পরিচিত। স্তনের ভেতরের টিস্যু বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপারটির আরেক নাম স্তনে চাকা বা পি- সৃষ্ট হওয়া। স্তনের পি- বিভিন্ন ধরনের এবং এটির ফলে সৃষ্ট অনুভূতিও হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন। স্তনে পি- হলে যে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে তা হলো- স্তনে নির্দিষ্ট সীমারেখাযুক্ত পৃথক পিন্ড। স্তনে পুরু ও বিশেষ স্থান সৃষ্টি হওয়া, যা আশপাশের স্তনের টিস্যুর চেয়ে ভিন্ন।
স্তনের অন্য কোনো পরিবর্তন, যেমন- লালভাব সৃষ্টি হওয়া, টোল পড়া বা গুঁটি সৃষ্টি হওয়া। একটি স্তন অপরটির চেয়ে অস্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে যাওয়া। স্তনবৃন্তে পরিবর্তন। যেমনÑ স্তনবৃন্ত ভেতরে ঢুকে যাওয়া ও সেখান থেকে অবিরতভাবে তরল নির্গত হওয়া। স্তনে ব্যথা বা নরমভাব সৃষ্টি হওয়া। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্তনের পিন্ড স্তনের ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে। তাই এ সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
স্তনে পিন্ড হওয়ার ঝুঁকি : স্তনে পিন্ড হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে যে বিষয়গুলো তা হলো- আগে স্তন ক্যানসার হওয়া। কোনো নিকটাত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকা। বয়স বৃদ্ধি (৩৫ বছরের আগে ৫ শতাংশ এবং ৫০ বছরের আগে ২৫ শতাংশ)। সন্তান জন্ম না দেওয়া বা ৩০ বছরের পর প্রথম সন্তান জন্ম দেওয়া। স্তন্যপান না করানো। মাসিক স্বাভাবিক সময়ের আগে শুরু হওয়া ও পরে বন্ধ হওয়া। হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি। বুকে তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব (মাত্রা কম হলেও)। স্তনের আকার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণত এ ঝুঁকির কোনো সম্পর্ক নেই। তবে কোন ধরনের ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহৃত হচ্ছে, তা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
পরামর্শ : স্তনে পিন্ড সৃষ্টি হলে এবং সেখানে ব্যথা অনুভূত হলে প্রথমে সাধারণ চিকিৎসক বা গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। স্তনের অনেক পি-ই ক্ষতিকর নয়। তবু কিছু ক্ষেত্রে বায়োপ্সি করার প্রয়োজন হতে পারে। ম্যামোগ্রাফি বা বায়োপ্সিতে আরও গুরুতর পরিবর্তন ধরা পড়লে ক্যানসার সার্জন ও অনকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
এ সময় সতর্কতা : কোভিড-১৯ নামক ভাইরাসে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ঘরেই থাকতে হবে। ঘন ঘন সাবান পানির ফেনা দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড হাত কচলিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। লোক সমাগম এড়িয়ে চলতে চলাসহ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে।
লেখক : চিফ মেডিক্যাল অফিসার
জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা
চেম্বার : মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিস লি.
জাকির সুপার মার্কেট, নারায়ণগঞ্জ
০১৯১৩১১৯৯৮৯; ০১৭৭৮৪৩৭৮৮৯