একেই নামে দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়ে বিভ্রান্তিতে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও প্রশাসন
সুনামগঞ্জে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করতে একেই এলাকায় পাশা পাশি দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় একেই নামে স্থাপন করায় বিভ্রান্তিতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা, একেই সাথে প্রশাসনের দায়িত্বশীল কতৃপক্ষও।
দোয়ারাবাজার উপজেলা লক্ষীপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে চকবাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও চকবাজার হাই স্কুল নামে দুটি বিদ্যালয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা হচ্ছে।এলাকাবাসীর দাবি, সমন্বয় ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া উচিত নয়।
স্থানীয়রা বলছেন,দ্বন্দ্ব ভুলে দুই পক্ষ যদি আলোচনার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানে একত্রিত হয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে এবং অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে। অন্যথায় এই দুটি স্কুলেরই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হোক।
বিভ্রান্তির সূত্রপাত ২০২৩ সালে, যখন “চকবাজার উচ্চ বিদ্যালয়” নামে পুরাতন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে, কাছাকাছি এলাকায় “চকবাজার হাই স্কুল” নামে আরেকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়।
স্থানীয় সূত্রে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,গত ২০১৪ সাল থেকে “চাইল্ড কেয়ার মডেল একাডেমি” নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছিল,পরবর্তীতে ২০২২ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত হয়ে “চকবাজার উচ্চ বিদ্যালয়” নামে কার্যক্রম শুরু করে। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ছিলেন দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের সিএ শফিকুর রহমান এবং প্রধান শিক্ষক ছিলেন আব্দুল মোতালেব।
কিন্তু অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে গত ২০২৩ সালে কয়েকজন শিক্ষক আব্দুল মোতালেব, হুমায়ুন কবির, সুখী বেগম ও সুমন মজুমদার কে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তারা এ ঘটনাকে অন্যায় ও প্রতারণা দাবি করে আদালতে শফিকুর রহমানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে অব্যাহতি প্রাপ্ত শিক্ষকরা পাশাপাশি এলাকায় চকবাজার হাই স্কুল নামে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। বর্তমানে এই স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬০ জন। তবে উভয় স্কুলের নাম প্রায় এক হওয়ায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজিম মিয়াসহ অনেকেই বলেন, একই নামে দুটি স্কুল থাকায় আমরা অভিভাবকরাও বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছি। চেষ্টা করেছি দুই পক্ষকে এক করতে, কিন্তু শফিকুর রহমান তাতে রাজি হননি।
চকবাজার হাই স্কুল এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাই আমরা নতুন স্কুল গড়ে তুলি। তবে একই নাম থাকায় অনুমোদন পেতে জটিলতা হচ্ছে। আমরা চাই,একটি একক স্কুল হোক এতেই শিক্ষার্থীদের মঙ্গল।
চকবাজার উচ্চ বিদ্যালয় এর বর্তমান প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন দাবি করেন, আমরাই মূল প্রতিষ্ঠান। কিছু শিক্ষক বের হয়ে গিয়ে আরেকটি স্কুল তৈরি করেছেন। একই নামে স্কুল থাকায় সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একই নামে দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চলতে পারে না,এই বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে রিপোর্ট পাঠানো হবে।
সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এর বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম জানিয়েছেন, একই নামে দুটি প্রতিষ্ঠান চলবে না। আমরা স্থানীয় ভাবে বিষয়টি সমাধান করতে বলেছি, সমাধান এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।







