সুনামগঞ্জ সীমান্তে চোরাচালান: ঠাকুর ঘরে-ই ভুত!
“বড়ছড়া কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের নবগঠিত কমিটির উচ্চ পদস্থ পদধারী বিএনপি নেতা বুঙ্গা কয়লা (বিনাশুল্কে চোরাচালানে আসা) থেকে প্রতি মেট্রিকটনে দক্ষিণা নিচ্ছেন দেড় হাজার টাকা”। চাঞ্চল্যকর এমন তথ্য তুলে ধরেন তাহিরপুর উপজেলার এক সাংবাদিক। মঙ্গলবার রাতে (১৫ অক্টোবর) ফেসবুক ওয়ালে উপরোক্ত তথ্য তুলে ধরা হয়। মুহূর্তে ওই স্ট্যাটাস ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। “এ টাকা যতসামান্য” রসাত্মকভাবে এমন মন্তব্য করে খবরের সত্যতার জন্য স্ক্রীনশর্ট রেখে দেন অনেক সংবাদকর্মী।
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য হলো- হাসিনা সরকার গদিচ্যুত হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের সংগঠন “তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপ” কার্যালয় দখলে নেয় বিএনপি দলীয় চক্র। যদিও গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছলে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দেখা যায় বড়ছড়া এলাকায়। পরে তড়িঘড়ি করে দ্বন্দ্বের ডালপালাও স্তব্ধ হয় নিমিষে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেছেন, তাহিরপুর সীমান্তে চোরাচালান কারবার অতীতের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বড়ছড়া, কলাগাঁও, লালঘাট, চাঁনপুরসহ বিভিন্ন সীমান্তপথে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে চোরাই কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্য বিনাশুল্কে পাচার হচ্ছে দেদারসে। পাচারের কয়লা রাতের আধারে নৌকা-ঠেলাগাড়িযোগে বড়ছড়া কয়লা ডিপোতে রাখা হয। পরে বৈধ কাগজের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করা হয চোরাইপথে আসা কয়লা। আর বৈধতা দিতে প্রতি মেট্রিকটনে দেড় হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন নবগঠিত কমিটির উচ্চ পদস্থ পদধারী প্রভাবশালী জনৈক বিএনপি নেতা।
উল্লেখ্য, কয়লা আমদানীকারক গ্রুপ কার্যালয় দথল বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন রুহুল আমিন। তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন তিনি। গেল ৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার সর্বত্র বিএনপি নামধারীদের চাঁদাবাজি-নৈরাজ্যের কথা উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেন এই বিএনপি নেতা। অভিযোগের একাংশে উল্লেখ-উপজেলায় আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অবৈধ চাঁদা আদায়ের সকল উৎস, বিভিন্ন হাট-বাজার, নৌকাঘাট ও “সমিতি দখল” এবং বালু মহালে সমঝোতায় জনদুর্ভোগ ও সাধারণ মানুষের উপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। ফলে জনসাধারণের মধ্যে দলীয় ভাবমূর্তির বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে উল্লেখ করে দলীয় হাইকমাণ্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেন রুহুল আমিন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ‘সমিতির নামে কোন ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড হয় না’ বলে সাফ জানিয়েছেন তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি পদধারী বিএনপিনেতা খসরুল আলম।