চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার দ্বিতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
“রক্ত ঘামে বয়ে চলেছি দারুণ দ্রোহকাল/সময় এখন জোট বাঁধার ডাকছে মহাকাল” আহ্বানে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার দ্বিতীয় কাউন্সিল আজ সকালে শারদা হল সংলগ্ন মহড়া কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড নিখিল দাস এবং বাসদ সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমরেড আবু জাফর। দিনব্যাপী এই অধিবেশনের শুরুতে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন ও গৃহীত হয় এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর সাংগঠনিক রিপোর্ট ও প্রস্তাবনার উপর কাউন্সিলরগণ বিস্তারিত ও প্রাণবন্ত আলোচনা করেন। অধিবেশনে নাজিকুল ইসলাম রানা কে সভাপতি ও মলয় চক্রবর্তীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট নতুন জেলা কমিটি উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত করা হয়।
কাউন্সিল অধিবেশন শেষে কমিটি পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মাসুদ রানার সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন নাজিকুল ইসলাম রানা। সভায় বক্তব্য রাখেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড নিখিল দাস, বাসদ সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমরেড আবু জাফর, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সিলেট জেলা সংসদের সভাপতি প্রদীপ দেব রায়, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অপু কুমার সেনাপতি এবং কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মলয় চক্রবর্তী। এছাড়াও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক ড. আবুল কাশেম, পেশাজীবী ফোরামের সংগঠক আব্দুল ওয়াদুদ, বাসদ সিলেট জেলার সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, নাট্য ব্যক্তিত্ব নীলাঞ্জন দাস টুকু, বাসদ সিলেট জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, লিটল থিয়েটারের দেবজ্যোতি দেবু, শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন বেপারী প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির জন্যে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অদুরদর্শী কর্মকাণ্ডই দায়ী। দেশের মানুষ বার বার জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে প্রমাণ করলেও দেশের শাসকগোষ্ঠী এখনো একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণ করতে পারেনি। জনগণের আকাঙ্খাকে ধারণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা না করায় একের পর এক গণবিক্ষোভ ও অভ্যুত্থান ঘটছে। মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনার বিপরীতে রাষ্ট্র পরিচালনার দরুন সাম্প্রদায়িক আস্ফালন ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর নিকট নতজানু নীতি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে সাংস্কৃতিক কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা মামলা যেমন হচ্ছে, তেমনি মাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুরের ঘটনা জনমনে গভীর উদ্রেকের সঞ্চার করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতীষ্ঠা একে অপরের পরিপূরক। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি কখনোই প্রতীষ্ঠা সম্ভব নয়। বক্তারা দেশে একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রগতিশীল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐক্যবদ্ধতার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। সভার শেষে নবনির্বাচিত কমিটির নিম্নোক্ত সকল সদস্যের পরিচয় করিয়ে দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড নিখিল দাস।
সভাপতি নাজিকুল ইসলাম রানা, সহ-সভাপতি মাসুদ রানা, জহর কুমার সিংহ, সাধারণ সম্পাদক মলয় চক্রবর্তী, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন তালুকদার, অর্থ সমীরণ দাস আদি, দপ্তর সুষ্মিতা তালুকদার তৃণা, প্রচার ও প্রকাশনা মেকদাদ মেঘ, সংগীত ও আবৃত্তি প্রিয়তা রুমা, নাট্য ও চিত্রকলা সুইটি রাণী চন্দ, চলচ্চিত্র ও সাহিত্য হৃদি সিনহা, যন্ত্রসংগীত অনিক আচার্য, সদস্য সুমন আহমদ, রীতা তালুকদার, প্রেরণা পুরকায়স্থ, ফারজানা রহমান প্রিতু।









