বন্যার্তদের ঈদ আনন্দ
দৈনিক সিলেট ডট কম
তামান্না ই জান্নাত লিমা: ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ।এই দিনে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের আনন্দের সীমা থাকেনা।কিন্তু কিছু পরিস্থিতি সেই আনন্দের ঈদকেই দুঃখে পরিনত করে। ঠিক তেমনি একটি পরিস্থিতি নিয়ে এসেছে এবারের বন্যা। দেশের ৩১ টি জেলার ৫০ লক্ষাধিক মানুষ বন্যায় ঘরবন্দী হয়ে দিন যাপন করছেন। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের ঘরে ঈদের আনন্দ তো দুরের কথা,তিন বেলার খাবারই জোটেনি। এমনকি তারা ঘর থেকেই বের হতে পারছে না। অনেক বাবা পারেনি সন্তানের মুখে ঈদেরআনন্দ ফুটিয়ে তুলতে,পারেনি দিতে ভাল খাবার, নতুন জামা। একদিকে করোনা মহামারিতে মানুষ ঘরবন্দি অন্য দিকে এই দুর্যোগ। এ যেন কাটা ঘায়ে লবনের ছিটার মত।ঐ সকল অঞ্চলের মানুষের জীবিকা নির্বাহের সকল পথ বন্ধ। তাই দুমুঠো খাবারের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে ত্রাণের জন্য। অনেক মানুষের নিজগৃহটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আবার অনেকে পরিবারের সদস্য ও গবাদি পশু মিলে এক ঘরে অবস্থান করসে।সবমিলিয়ে ঈদের আনন্দ তাদের কাছে ক্ষীয়মান।ঈদুল আযহা মূলত সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে পালিত হয়। মুসলমান জাতি তাদের প্রিয় পশুটি কোরবানির মাধ্যমে সন্তুষ্টি অর্জন করে। কিন্তু এই বানভাসি মানুষেরা যেখানে বেঁচে থাকার জন্য সর্বক্ষণ লড়ায় করে চলেছে সেখানে কোরবানির কথা ভাবা বিলাসিতা মাত্র। ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার বাইরে বাস্তবিক জীবন যে কতটা অসহায় তা এই দুর্যোগ জানিয়ে দিল। দূর থেকে দেখে আমরা কষ্ট পাচ্ছি আর সমবেদনা জানাচ্ছি। কিছু মানবতাবাদি মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। সরকারি বেসরকারি নানা ত্রান তৎপরতা ও দেখা যাচ্ছে। আর স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের সাধ্যমত সহযোগিতা করছে। তবুওএই অর্ধাহার,অনাহারে থাকা বানভাসি মানুষের কষ্টের সীমা নাই। নাই ঈদ আনন্দের ছিটাটুকুও। তাদের মাঝে আছে শুধু সবকিছু হারানোর হাহাকার। তাই আমাদের সবাইকে এক হয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে। নিজেদের সাধ্যমত বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নিতে হবে। সব কিছু স্বাভাবিক হলে পরবর্তী বছর ঈদসবার মাঝে আনন্দের বন্যা বয়ে নিয়ে আসবে। সবার মুখে ফুটে উঠবে ঈদের খুশি।