মহানবী (সা.) যে সাহাবিকে ‘জাহাজ’ উপাধি দিয়েছিলেন
দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেট ডেস্ক : নবীজি (সা.)-এর প্রতি অগাধ ভালোবাসাকে বহু সাহাবি বহু কিছু করেছেন। তাঁদের মধ্যে একজন সাফিনাহ (রা.)। যিনি নবীজি (সা.)-এর জবান মোবারক থেকে বের উপাধি ‘সাফিনাহ’ নামটি আজীবন নিজের নাম হিসেবে গ্রহণ করে নেন। কেউ তাকে তাঁর নাম জিজ্ঞেস করলে, তিনি তাঁর নাম ‘সাফিনাহ’ই বলতেন।
কারণ নবীজি (সা.) তাকে একবার এই নামে ডেকেছেন।
ইতিহাসে তাঁর মূল নাম বিভিন্ন রকম পাওয়া যায়। যেমন: মিহরান, মিফলাহ, আবস, আহমার, রুমান। প্রসিদ্ধ নাম ‘সাফিনাহ’, যার শাব্দিক অর্থ জাহাজ বা বড় নৌকা। এক বর্ণনামতে, তিনি উম্মে সালামা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম; রাসুল (সা.)-এর নয়। তবে অপর বর্ণনামতে তিনি উম্মে সালামা (রা.)-এর গোলাম ছিলেন বটে, তবে তিনি রাসুল (সা.)-কে হাদিয়াস্বরূপ দান করেন। পরবর্তী সময়ে রাসুল (সা.) তাঁকে আজাদ করে দেন।
ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) বিশিষ্ট তাবেঈন সাঈদ ইবনে জুমহান (রহ.) সূত্রে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, হাজ্জাজের যুগে আমি ‘বতনে নাখলা’ নামক স্থানে সাফিনাহ (রা.)-এর সাহচর্যে তিন দিন ছিলাম। তখন আমি তাঁকে রাসুল (সা.)-এর অনেক হাদিস সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করি। পরিচয়পর্বে আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনার নাম কী? প্রতি-উত্তরে তিনি বলেন, তা তো আমি বলব না। তবে রাসুল (সা.) আমার নাম রেখেছেন ‘সাফিনাহ’। এখন এটাই আমার নাম।
এরপর আমি প্রশ্ন করলাম, কেন এই নাম দিয়েছেন তিনি? বললেন, কোনো এক সফরে রাসুল (সা.) ও তাঁর সাহাবিদের পক্ষে সামানপত্র বহন করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তখন প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেন, তোমার চাদর বিছাও। আমি চাদর বিছালাম। সবাই আমার চাদরে নিজেদের সামানপত্র জমা করল। অতঃপর তা আমার ওপর (কাঁধে বা মাথায়) তুলে দিল। তখন রাসুল (সা.) আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘উঠাও! তুমি একটি ‘সাফিনাহ’ তথা জাহাজ। ’ সাফিনাহ (রা.) বলেন, আল্লাহর কসম! সেদিন এক-দুই উট নয়, যদি ছয়-সাত উটের বোঝাও আমি বহন করতাম, তবে তা আমার জন্য ভারী অনুভব হতো না। (আনসাবুল আশরাফ : ১/৪৮০; আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ : ৪/৬২৩)