শ্রমজীবী মানুষের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দাও: সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট

দৈনিকসিলেটডটকম
শ্রমজীবীদের কল্যাণে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ ও অত্যাবশকীয় পরিসেবা বিল বাতিলের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধনে ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৩১মে বুধবার বিকাল ৫টায় টুকেরবাজারে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নেতা বেলাল আহমদ, ফখরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, নুরুল আহমদ, জাবেদ হোসেন, আবু খায়ের, আনোয়ার হোসেন কুটি, আরমান হোসেন, মকবুল মিয়া, সোহেল আহমদ, আমিনুল ইসলাম,জাবের মিয়া,সাদিক হোসেন প্রমূখ। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এস.ডি.জি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে।
এস.ডি.জি’র ১৭ টি লক্ষ্যের প্রথম লক্ষ্য কোনো দারিদ্র থাকবেনা, দ্বিতীয় লক্ষ্য খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নয়ন, অষ্ঠম লক্ষ্য শোভন ও পূর্ণকালীন কাজ নিশ্চিত করা, দশম লক্ষ্য বৈষম্য বিলোপ। করোনা পরবর্তীতে দারিদ্র বেড়েছে, বেড়েছে অপুষ্টি, কর্মহারিয়ে অনিশ্চয়তায় ধুঁকছে লক্ষ লক্ষ পরিবার, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য তীব্র হয়েছে। এই সময়ে এস.ডি.জি অর্জন করতে হলে প্রায় ৭ কোটি শ্রমজীবী মানুষ কে সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। তাদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে ভর্তুকি মুল্যে নিত্যপণ্যের রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে, সুস্থ কর্মী উৎপাদনের অন্যতম শর্ত তাই শ্রমজীবীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ও আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। দেশে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রের সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে ফলে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের বার্ধক্যকালিন নিরাপত্তার জন্য শ্রমজীবী পেনশন স্কীম চালু করতে হবে। আর সরকারী কর্মচারীদের পেনশন, সঞ্চয় পত্রের সুদ, কৃষি ভর্তুকির টাকা অন্তর্ভূক্ত করে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ স্ফীত করে দেখালে তা এস.ডি.জি অর্জনের আন্তরিকতার অনুপস্থিতিই প্রমাণ করবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন,বাজেট একটি দেশের অর্থনৈতিক নীতি এবং ব্যবস্থাপনার দলিল। বাজেট প্রণয়নে গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিদের সংগে মতবিনিময় করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান শক্তি শ্রমিক কর্মচারীরা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য বাজেট উত্থাপন করার আগে কখনই জাতীয় অর্থনীতির প্রধান অংশ (সংখ্যায় এবং অবদানে ) ও সভ্যতার কারিগর শ্রমিকশ্রেণীর কোনো মতামত নেওয়া হয়না। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দা এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে চলেছে। একদিকে বৈশ্বিক মহামারী করোনা অন্যদিকে যুদ্ধের কারণে অস্বাভাবিক বাজার এবং সুযোগ সন্ধানি ব্যবসায়ী চক্রের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের মূল্য উর্দ্ধমুখী।
শ্রমজীবী মানুষের উপার্জন এবং প্রকৃত মজুরি উভয়ই কমেছে। সমাবেশে বক্তারা,২০২৩-২৪অর্থ বছরের বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে রেশন, আবাসন, চিকিৎসা ও পেনশন স্কীম চালু করার জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ ও অত্যাবশকীয় পরিসেবা বিল বাতিলের দাবি জানান। সমাবেশে বক্তারা বৃহত্তর টুকেরবাজার এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।