কমলগঞ্জে বৃষ্টি কম হওয়ায় দুশ্চিন্তায় নার্সারি ব্যবসায়ীরা

দৈনিকসিলেট ডটকম :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বৃষ্টি কম হওয়ায় নার্সারিগুলোতে ফলদ, বনজ, ঔষধিসহ বিভিন্ন ধরনের চারা গাছ বিক্রি কমে গেছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর চারা বিক্রি কম হওয়ায় হতাশ নার্সারি ব্যবসায়ীরা। তবে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে চারা বিক্রি নিয়ে আশাবাদী তাঁরা।
কয়েকজন নার্সারি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বৈশাখের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গেই চারা গাছ বিক্রির ধুম পড়ে। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় চারা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। সারা বছর পরিশ্রম করে মৌসুমে চারা বিক্রি করতে না পারলে অনেক ব্যবসায়ীকে লোকসান গুনতে হবে।
জানা যায়, বনাঞ্চল অধ্যুষিত ও মাটি উর্বর থাকায় এ উপজেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ৮০টি নার্সারি আছে। এসব নার্সারি থেকে বছরে প্রায় ২ থেকে আড়াই কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়। বেশিরভাগ নার্সারি গড়ে উঠেছে সড়কের পাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায়। যদিও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এর সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা জানা যায়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার শমশেরনগর বিমানবন্দর ও পতনঊষার এলাকার সড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে একটির পর একটি নার্সারি রয়েছে। এসব নার্সারিতে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি গাছের চারা উৎপাদন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব নার্সারির চারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য যায়।
বিসমিল্লাহ নার্সারিতে চারা কিনতে আসা শফিক আহমদ বলেন, তিনি প্রায় ১ মাস ধরে এখান থেকে পাইকারি চারা গাছ কিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ভ্যানগাড়ির মাধ্যমে বিক্রি করেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর চারা অনেক কম বিক্রি হয়েছে। বৈশাখের শুরুতে বৃষ্টি হলে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি করা যেত।
উপজেলার বিউটি নার্সারির মালিক বেলাল হুসাইন বলেন, এ বছর তিনি ২০ লাখ টাকার চারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কিনেছেন। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আশানুরূপ চারা বিক্রি করতে পারেননি। তবে কয়েক দিন আগে অল্প বৃষ্টি হওয়ায় আগের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে।
একটি নার্সারিতে চারা গাছ কিনতে আসা ব্যবসায়ী সামি আহমদ বলেন, তিনি নতুন পুকুরের পাড়ে গাছ রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু পানির অভাবে চারা রোপণ করতে পারেননি। সম্প্রতি বৃষ্টি হওয়ায় চারা কিনতে এসেছেন। শমশেরনগর ঈগল নার্সারির পরিচালক আজাদুর রহমান বলেন, তাঁরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সারা বছর চারা সংগ্রহ করেন। বৈশাখ মাসের বৃষ্টিতে চারা বিক্রির ধুম পড়ে। এ বছর একটু দেরিতে চারা বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ রায় বলেন, এখানে ছোট-বড় অনেক নার্সারি আছে। এসব নার্সারির মাধ্যমে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। এই উপজেলার মাটি উর্বর থাকায় অতি সহজেই যে কোনো ফল, ফুল, বাগান বা নার্সারি করা সম্ভব।