জট খুলছে না শ্রীমঙ্গলের রিসোর্টে পর্যটকের রহস্যময় খুনের

দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে লেমন গার্ডেন রিসোর্ট থেকে উদ্ধার করা মরদেহের বিষয়টি এখনও রহস্যময় রয়েছে। এ ঘটনায় জনমনে ব্যাপক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ মৃত্যু ঘিরে রহস্যের জট খুলছে না। পুলিশের ধারণা, ব্যবসায়িক লেনদেন বা ভুল বোঝাবুঝির কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার সঙ্গে যারা রিসোর্টে ছিল, তাদের ধরতে অভিযান চলছে। তারা ধরা পড়লে খুলবে রহস্যের জট। রোববার (২৭ আগস্ট) রাতে ওই রিসোর্টের একটি কক্ষের ভেতর থেকে শফিকুল ইসলাম নামে এক পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার (২৮ আগস্ট) সকালে শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মুন্নী বেগম শ্রীমঙ্গল থানায় হত্যা মামলা করেছেন। শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মুন্নী বেগম জানান, শফিকুলের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুর উপজেলার হাটুভাঙ্গা গ্রামে। পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকার ভাটারায় ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ফাঁসেরটেক এলাকায় থাকতেন। তিনি ভাটারা এলাকায় কাগজের কার্টনের ব্যবসা করতেন। গত ২৪ আগস্ট রাতে শফিকুল শ্রীমঙ্গলের পর্যটন স্পটগুলোতে বেড়াতে তিন বন্ধুর সঙ্গে ঢাকা থেকে রওনা দেন। পরদিন সকালে শ্রীমঙ্গলে পৌঁছে স্ত্রীকে কল দিয়ে জানান।
মুন্নী বেগম বলেন, রোববার শ্রীমঙ্গল থানা থেকে একজন কর্মকর্তা ফোন করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানান। রাতেই আমি, আমার ছোট ভাই, দেবর, দেবরের শ্যালকসহ শ্রীমঙ্গলে আসি।
রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ২৫ আগস্ট সকাল পৌনে ৮টায় রিসোর্টে আসেন নুরুল আমিন রাব্বি নামে এক ব্যক্তি। রিসোর্টে পরিচয় জানিয়েছেন তিনি চাঁদপুরের শাহারাস্তি উপজেলার খাসেরবাড়ি এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে। তার সঙ্গে ছিলেন মরদেহ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিসহ অজ্ঞাত তিনজন। তারা রিসোর্টের বৃষ্টিবিলাস ভবনের ৫ নম্বর কক্ষ ভাড়া করেন। রোববার সকালে তাদের কক্ষ ছাড়ার কথা ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা কক্ষ না ছাড়ায় রিসোর্টের স্টাফ সহিদুল ইসলাম গিয়ে কক্ষটি তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে সহিদুল কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে ডাকাডাকি করার পর কেউ সাড়া না দিলে বিষয়টি রিসোর্ট কর্তৃপক্ষকে জানান তিনি। পরে পুলিশকে জানালে তারা রিসোর্টে এসে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তখন বিছানার ওপর রক্তাক্ত মরদেহ দেখা যায়।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার জানান, মামলায় আসামি করা হয়েছে তিনজনকে। রিসোর্ট কক্ষে শফিকুলের সঙ্গে ওই তিনজন ছিল বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ঘটনার পর থেকে পলাতক। সুরতহাল রিপোর্টের পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত প্রকৃত ঘটনা কি তা নিশ্চিত হওয়া যাবে না।