সুনামগঞ্জে সুরমাপাড়ে ভাঙন, আতঙ্কে স্থানীয়রা

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের তেলিয়া গ্রামসংলগ্ন এলাকায় সুরমা নদীর তলদেশে ভাঙছে পাড়। ওপরে নষ্ট হচ্ছে গ্রাম রক্ষার জন্য নদীর পাড়ের ভাঙন প্রতিরোধের লক্ষ্যে তৈরি করে রাখা অব্যহৃত ব্লক। এমন অবস্থায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের লাগোয়া তেলিয়া চৌধুরী বাড়ির মোড় থেকে শাহ্পুর পর্যন্ত নদীতে বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রামের শাজাহান মিয়া, শামছুদ্দিন, আলেক হোসেন, কাদির মিয়া, ইয়াছিন মিয়া, বাবুল চক্রবর্তী, কুলসুমা বেগমসহ বেশ কয়েকজন বাসিন্দার বসতঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে আরও বাড়িঘর ও সড়ক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই অংশে নদীভাঙন ঠেকানোর জন্য ২০১১-১২ অর্থবছরে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকার ব্লক বিছানো হয়। তবে নিম্নমানের ও অপরিকল্পিত কাজ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এ ক্ষেত্রে। যার ফলে কাজের মাত্র এক বছরের মাথায় ব্লকগুলো নষ্ট হতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করে স্থানীয়রা।
তেলিয়া গ্রামের ঝালু মিয়া জানান, ১০-১২ বছর আগে সেখানে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নদীভাঙন ঠেকানোর কাজ হয়েছে। কিন্তু ভালো কাজ না হওয়ায় এক বছর পরেই আবার সবকিছু নদীতে গেছে। এখন ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। আগে কাজ হওয়ার সময় খাদ্যগুদাম কমপ্লেক্স এবং গ্রামের গোলাম মর্তুজার বাড়ির সামনে হাজার খানেক ব্লক তৈরি করে রাখা হয়েছিল, কোথাও ভাঙন দেখা দিলে এগুলো ব্যবহার করা হতো। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় সেগুলো পড়ে থেকেই নষ্ট হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের জামালগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জানান, তেলিয়ার নদীভাঙন রোধে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকার নদী সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ হয়েছিল। ওই সময় ৫ শতাংশ ব্লক তৈরি করে রাখা হয়েছিল পরে কাজে লাগানোর জন্য। ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে এক বছর পর। তখনকার দায়িত্বশীলরা হয়তো ভেবেছিলেন এক বছরের মধ্যে ভাঙলে ব্লক বিছানোর খরচ দেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এক বছর পরে ভাঙন শুরু হওয়ায় ব্লক বিছানোর ব্যয়ের কথা ভেবে কাজ করা হয়নি।
এ ধরনের জরুরি কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ড উদ্যোগী হলে কিংবা স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিলে ব্লক বিছানোর টাকার ব্যবস্থা করা যেত কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে উপসহকারী প্রকৌশলী বলেন, এই প্রশ্নের জবাব আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীই দিতে পারবেন। তিনি জানান, ওই ভাঙন এলাকায় নদীশাসনের কাজের জন্য ২৫ কোটি টাকা একনেকে অনুমোদন হয়েছে। এখন ডিজাইন হয়ে এলেই এই বছরের শেষ দিকে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এর পর পরিকল্পিতভাবে করা হবে নদীশাসনের কাজ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, ফেলে রাখা ব্লকগুলো কেন ভাঙনের শুরুতে কাজে লাগানো হলো না, তা তাঁর জানা নেই।