নিদিষ্ট সময়েও শেষ হয়নি শাহ আরেফিন মৈত্রী সেতু কাজ
তাহিরপুর প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি ও বিন্নাকুলী গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীতে নির্মানাধিন শাহ আরেফিন (রাঃ)-অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতু।
২০১৮ সালের মার্চ মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে ৭৬ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেছে দায়িত্বলীরা। বর্তমানের কাজের গতি নেই বললেই চলে। অথছ সেতুটি নির্মাণে নির্দেশনা ছিল ৩০মাসের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পূর্ণ শেষ করার। কিন্তু নানান অযুহাত দেখিয়ে কাল ক্ষেপন করায় গত ৫ বছরেও শেষ করতে পারেনি।
সচেতন মহল বলছেন, সেতুটির উপর জেলার তিনটি উপজেলার হাজার হাজার মানুষের বহু প্রতিক্ষিত স্বপ্নপুরণের ধার প্রান্তে এসে আটকে আছে। অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে বিলাশ যাদুকাটা নদী পারাপার হতে হচ্ছে। আর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা,আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না৷
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, যাদুকাটা নদীর উপর ‘শাহ আরেফিন (রাঃ) ও অদ্বৈত মহাপ্রভু’ মৈত্রী নামে সেতু নির্মাণ করছে সরকার। ৭৫০মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৮৫কোটি ৮৬ লাখ টাকা। নির্মাণকাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। ২০১৮সালের মার্চ মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে ৩০মাসের মধ্যেই এই সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হলেও সেতুটির ৭৬শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সেতুর ১৫টি পিলার ও ৭৫ টি গার্ডারের মধ্যে ৫৩ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও ব্রিজের অন্যান্য কাজ চলমান রয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এপারে গড়কাটি (পশ্চিম) বোত্তাশাহ মাজার,ইসকন মন্দির ,শিমুল বাগান, বারেকটিলা, শহীদ সিরাজলেক, টাংগুয়ার হাওর, তিনটি শুল্কবন্দর, সীমান্ত সড়ক (মধনগর, ধর্মপাশা, কলমাকান্দা, ময়মনসিংহ ও সুনামগঞ্জ জেলা যাতায়াত সড়ক) সহ বিভিন্ন পর্যটন স্পষ্ট ওপারে (পূর্ব) শাহ আরেফিন (রঃ) আস্তানা, হিন্দু সম্প্রদায়ের পনতীর্থ উৎসব কেন্দ্র (গঙ্গাসান্ন) অদৈত্ব মহাপ্রভুর মন্দির,মাঝে যাদুকাটা নদী। নদীতে সেতু না থাকায় নদী পারাপারে দূর্ভোগের শেষ নেই জেলার তিনটি উপজেলার (মধ্যনগর, ধর্মপাশা ও তাহিরপুর) বাসিন্দাদের।
সেতু পাশেই উপজেলার বৃহত্তর বাদাঘাট বাজার। বাজারের বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুক মিয়া জানান, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় জনদুর্ভোগ লাঘবে যাদুকাটা নদীতে নির্মাণাধীন সেতুটি দ্রুত গতিতে কাজ শেষ না করায় বাদাঘাট বাজারে কয়েক হাজার ব্যবসায়ীসহ ছোট বড় ৩০-৩৫বাজারের ব্যবসায়ীগন তাদের মালামাল পরিবহন করতে পারছে না।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন,এলাকার যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পাশাপাশি সেতুটি উপজেলার তিনটি স্থলবন্দর,পযর্টন স্পট গুলো ব্যাপক ভাবে স্থানীয় বেকার যুবকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। নির্মাণ কাজের গতি বাড়িয়ে দ্রুত সেতুটি সম্পন্ন করা খুবেই প্রয়োজন।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আরিফ উল্লাহ খান বলেন,কাজ চলমান রয়েছে।আশাকরি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেতুর কাজ শেষ হবে। আর কাজ শেষ হলেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব আলম জানান,করোনা, বন্যাসহ বিভিন্ন কারনে সেতুটির কাজ সময় মত শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে ৭৬ভাগ কাজ শেষ হয়েছে, আশা করছি খুব শ্রীর্ঘই এর উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, যাদুকাটা নদীর উপর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের প্রতিফলন শাহ আরেফিন(রাঃ)-অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতুটির উপর তাহিরপুর উপজেলাসহ মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার অনেক কিছু নির্ভর করছে। জনস্বার্থে সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলব।