সুনামগঞ্জ-৩ আসনে কে হচ্ছে নৌকার মাঝি?

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন– এম এ মান্নান, নাকি আজিজুস সামাদ ডন? এ নিয়ে নির্বাচনী এলাকার জনগণের মধ্যে জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীসহ রাজনৈতিক মহলে। ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর দলীয় ফরম সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে। এ আসনের জন্য ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, সাবেক এমপি মরহুম আবদুর রইছের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট খায়রুল কবীর রুমেন পিপি এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
জগন্নাথপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও আট ইউনিয়ন এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলার আট ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জ-৩ আসন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ আসনে একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সামাদ আজাদ। ২০০৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে উপনির্বাচনে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে বয়কট করার কারণে সামাদপুত্র ডন সে নির্বাচনে অংশ নেননি। বাবার শূন্য আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য জনগণের দাবি উপেক্ষা করেন। দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখিয়ে তিনি উপনির্বাচন বয়কট করলেও এ নির্বাচনে সাবেক যুগ্ম সচিব এম এ মান্নান অংশগ্রহণ করেন।
ওই উপনির্বাচনে বিএনপির জোট প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর কাছে সামান্য ভোটে পরাজিত হন মান্নান। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করলে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সে সুবাদে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে তাঁর সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ও পরবর্তী সময়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। এ আসন থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়ে এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকায় তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নকাজ করেন। বড় প্রকল্পের উন্নয়নের কারণে এলাকায় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।
অন্যদিকে, আজিজুস সামাদ ডন তাঁর বাবার মৃত্যুর পর থেকে নির্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছেন। সামাজিক-রাজনৈতিক যে কোনো অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি সরব। ২০০৫ সালে বাবার শূন্য আসনে উপনির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে বয়কট করলেও ২০০৮ সালে মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে দলীয় প্রার্থী পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কাছে অল্প ভোটে পরাজিত হন।
এ ব্যাপারে আজিজুস সামাদ ডন বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেতে দীর্ঘদিন ধরে আমি মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সূক্ষ কারচুপির মাধ্যমে আমার জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমি আশাবাদী, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এবার মূল্যায়ন করবেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমি কাজ করতে চাই। অনেক বড় বড় প্রকল্পের কাজ চলমান। সুনামগঞ্জে বিমানবন্দর করতে চাই। জননেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করলে জীবনের শেষ নির্বাচন করতে চাই।
জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খায়রুল কবীর রুমেন জানান, এ আসনের নৌকা নিয়ে আমার পিতা প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাবার এ আসনে নির্বাচন করার লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, আমি ছাত্র অবস্থা থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছি। নৌকা পেলে নির্বাচন করব।