ইউটিউবে ভিডিও বানাতে গিয়ে বিমান বিধ্বস্ত

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
ইউটিউবে ভিউ বাড়ানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা যেন থামছেই না। অভিজ্ঞতা নিতে কখনো কবরে নামছেন ইউটিউবারা। কখনো বা ঘটাচ্ছেন উদ্ভট সব কাণ্ড। সেগুলো ভিডিও করে ছড়াচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক কিংবা ইউটিউবের মতে প্ল্যাটফর্মে। এবার ভিউ বাড়াতে এক ব্যক্তি নিজের বিমান ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনায় ফেলেন। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি তার। অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৬ মাসের জেল দেন আদালত।
ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে। ওই ব্যক্তির নাম ট্রেভর জ্যাকব। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, নিজের ইউটিউব চ্যানেলের ভিউ বাড়াতে ২০২১ সালের নভেম্বরে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নেন। পরে বিমানটির দুর্ঘটনার ভিডিও পোস্ট করেন ইউটিউবে। এর শিরোনাম- আই ক্র্যাশড মাই এয়ারপ্লেন। অর্থাৎ আমার বিমান দুর্ঘটনায় পড়েছে। ক্যারোলাইনার দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে তিনি বিমান ওড়ান ওই বছর নভেম্বরে। এ সময় ইঞ্জিনে সমস্যা হলে কেমন অবস্থা সৃষ্টি হয় সেই অভিজ্ঞতা নিতে তিনি এই ঘটনা ঘটান।
তার বিমান দুর্ঘটনার ভিডিও ইউটিউবে ভিউ হয় কয়েক লাখ। ভিডিওতে তাকে দেখা যায়, এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট বিমানটি থেকে তিনি বেরিয়ে আসছেন। কিন্তু এক হাতে তার সেলফি স্টিক। পরে লস পাদ্রেস ন্যাশনাল ফরেস্টে সবজি চাষের ঘন একটি এলাকায় প্যারাস্যুট দিয়ে নামেন। বিমানটিতে সবখানে ক্যামেরা বসানো ছিল। ফলে জঙ্গলের মধ্যে কোথায় তা পতিত হচ্ছে সেই দৃশ্যও ধারণ করা হয়। এমনকি বিধ্বস্ত হয়ে যেখানে পড়ে, সেখানকার দৃশ্যও আছে ধারণ করা ভিডিওতে। ট্রেভর জ্যাকব সাবেক অলিম্পিক স্নোবোর্ডার। পরে বিমানে স্থাপন করা ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পরে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড এবং ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করে। বিমানের ধ্বংসস্তূপ জ্যাকবকে সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেয়া হয়। ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বিমানটির ধ্বংসস্তূপের কাছে একজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে উড়ে যান জ্যাকব। সেখান থেকে তিনি ধ্বংসস্তূপ সংগ্রহ করেন।
ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। দীর্ঘ তদন্তের পর ২০২২ সালের এপ্রিলে জ্যাকবের বিমান ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেন। ফেডারেল প্রসিকিউটররা বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে প্রভাবিত করতে এই অপরাধ করে থাকতে পারেন জ্যাকব। তিনি নিজেকে খবরের অংশ বানাতে এবং তা থেকে আর্থিক সুবিধা আদায় করতে চেয়েছিলেন। এ ধরনের অপরাধ সহ্য করা যায় না।