জুমার নামাজ পরিত্যাগ করার যে পরিণাম
শরিফ আহমাদ
জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। জুমার নামাজ প্রসঙ্গে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি করো।’ (সুরা : জুমআ, আয়াত : ৯)
আল্লাহর আদেশ মেনে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়।
এতে পাওয়া যায় অনেক সওয়াব। মুছে যায় গুনাহের খাতা। আর যে ব্যক্তি জুমা তরক করে তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত।
তাঁরা রাসুল (সা.)-কে তাঁর মিম্বারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন, মানুষ যেন জুমার নামাজ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে, অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেবেন। এরপর তারা গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (মুসলিম, হাদিস : ৮৬৫)
যে ব্যক্তি অলসতা করে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়, সে সব ধরনের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়। তার অন্তরে মোহর মেরে দেওয়া হয়।
আবুল জাদ আদ-দামেরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বিনা কারণে অলসতা হেতু তিনটি জুমার নামাজ পরিত্যাগ করে আল্লাহ তার অন্তরের ওপর মোহর মেরে দেন। (যাতে কোনো কল্যাণ তাতে প্রবেশ করতে না পারে, ফলে তাতে কল্যাণ ও বরকত প্রবেশের দ্বার বন্ধ হয়ে যায়) (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৫২; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১১২৫)
মুনাফিকজাতীয় কেউ ছাড়া মুসলমান নামাজ ত্যাগ করতে পারে না। নামাজ আদায়ে বিলম্ব হলে মনের মধ্যে ভয় ও অপরাধপ্রবণতা কাজ করে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বিনা কারণে জুমার নামাজ পরিত্যাগ করে তার নামে মুনাফিক উপাধি লেখা হয় এমন কিতাবে, যার লেখা মোছা হয় না এবং পরিবর্তনও করা হয় না।
(কিতাবুল উম্মাহ : ১/২৩৯)
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়।
নামাজের কাফফারা প্রদান করতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণ মুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার সদকা করে। অন্য একটি বর্ণনায় এক সা গম বা অর্ধ-সা গম আল্লাহর ওয়াস্তে সদকা করার কথা বর্ণিত হয়েছে।
(আবু দাউদ, হাদিস : ১০৫৩; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১১২৮)