কোম্পানীগঞ্জে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক ৯
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে চাঁদাবাজীর ঘটনায় ৯ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সাধারণ জনতা।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে ১১ জনকে আসামী করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় কালিবাড়ি এলাকার ছাত্র সমন্বয়ক নুর আহমদ (২৫) বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেছেন। সে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সম্মুখসাড়ির একজন নেতা।
জনতার হাতে আটককৃতরা হলেন বুড়দেও গ্রামের রশিদ আলীর ছেলে আবু সাঈদ রবিন (২২), একই গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক শাহ জাহান আহমদ (২৯), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াত ইসলামের সাবেক আমীর পাড়ুয়া নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে আরিফ হাসান জুবায়ের (২৭), টুকের বাজারের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ রাজন মিয়া (২৫), শাকেরা এলাকার আব্দুল বাছেদের ছেলে দিদার হোসেন (২৫), কাঠালবাড়ী গ্রামের বাহার মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া (২৫), শাহ আরফিনের মোঃ হাইদুল ইসলামের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৬), বটেরতল গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে নাসির মিয়া (২৫), বাহাদুরপুর গ্রামের মোঃ কালু ভূইয়ার ছেলে সোলায়মান (২৭)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত অনুমান সাড়ে ১২টার সময় স্থানীয় বারকি নৌকার মাঝি ও বালু পাথর উত্তোলন শ্রমিকদের মাধ্যমে এলাকাবাসী খবর পায়, অভিযুক্তরা বারকি নৌকার মাঝি ও বালু পাথর উত্তোলন শ্রমিকদের অবৈধভাবে চাঁদা গ্রহণের মাধ্যমে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সাদা পাথর এলাকা ও ধলাই নদী হতে চুরি করে বালু-পাথর উত্তোলন করানোর বিনিময়ে অবৈধ সুবিধা আদায়ের নিমিত্তে চাঁদা দাবি করে। এ সংবাদ পাওয়ার পরে আশপাশ এলাকার প্রায় শতাদিক লোকজন বিষয়টি যাচাই করার জন্য রাত দেড়টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পান। এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনদের সামনে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামীরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ও তাদেরকে এ বিষয়ে কোন কথা না বলতে বলে এবং উত্তেজিত হয়ে ঘটনাস্থল হতে উপস্থিত জনতাকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি-ধামকি প্রদান করে। পরবর্তীতে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শ করে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় আসামীদের আটক করে এবং কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে জনতা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে এবং তাহাদের সাথে থাকা পলাতক দুইজনের নাম বলে। একজন হলেন নয়াগাঙ্গেরপাড় গ্রামের ইলিয়াছুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান মামুন (২৭) ও অপরজন লামাগ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে সোহেল আহমদ রানা (২৯)।
তবে আটককৃত ব্যক্তিদের পরিবার দাবী করছে তাদেরকে ফাসানো হয়েছে। তারা এসবের সাথে জড়িত নয়।
উল্লেখ্য: সরকার পরিবর্তনের পর কোম্পানীগঞ্জে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়ে নানা ‘অপরাধমূলক’ কর্মকাণ্ড করতে দেখা গেছে অনেককে। ছাত্র সমন্বয়ক ও ছাত্রদল দাবী করা মইনুল ইসলাম নামের একজনের নেতৃত্বে গরু ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই সময় সেনাবাহিনী তাদের আটক করে। এ ছাড়াও কয়েকদিন আগে কাটাখাল এলাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা লুটকালে দক্ষিণ বুরদেও গ্রামের কামরুল নামের একজনকে আটক করা হয়। এরা সবাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, গত কয়েকদিন আগে গভীর রাতে মহাসড়ক থেকে গাড়ি আটক করে চাঁদা দাবি করে ছাত্র সমন্বয়ক নামে কয়েকজন, পরে তার কাছে টাকা না থাকায় বিকাশে টাকা এনে তাদেরকে দিলে তারপর সেই গাড়ি চালককে ছেড়ে দেয় তারা।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বদিউজ্জামান বলেন, এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। অবৈধ সুযোগ সুবিধা দেবে বলে শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়কালে এলাকাবাসী তাদেরকে আটক করে বলে। আমরা তাদেরকে থানায় নিয়ে আসি এবং এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৯ জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।