মুহাম্মদ (সা.) উম্মত নন যারা
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মত হওয়ার বরকতে আমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত বা শ্রেষ্ঠ জাতি হওয়ার গৌরবপূর্ণ মর্যাদা লাভ করেছি। নবি (সা.)-এর প্রতি দেহমনে, চিন্তা-চেতনায়, কাজে-কর্মে, বিশ্বাসে, সর্বাত্মকভাবে ভালোবাসা প্রদর্শন ও তাঁর অনুসরণ-অনুকরণ করা ঈমানের অন্যতম দাবি। এ দাবি উপেক্ষা করে নবির উম্মত হওয়া যায় না। কিছু কাজ আছে, যা করলে নবির উম্মত হওয়ার গৌরব থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এখানে কয়েকটি কাজের কথা উল্লেখ করা হলো—
ছোটদের ওপর দয়া না করা
মানবশিশু মানববাগানের ফুল। তাদের সঙ্গে মন্দ আচরণ ও রাগারাগি করা যাবে না। তাদের ভালোবাসতে হবে। আদর করে বোঝাতে হবে। সঠিক পদ্ধতিতে শাসন করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমাদের ছোটদের ওপর দয়া করে না, আমাদের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না এবং ভালো কাজের আদেশ করে না, মন্দ কাজের নিষেধ করে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৯২১)
অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী
ইমরান বিন হোসাইন (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কারও সম্পদ ছিনতাই করে, সে আমার উম্মত নয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৯৩৭)
স্ত্রীকে স্বামীর বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে উসকে দেয় এবং মালিকের বিরুদ্ধে গোলামকে উসকে দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২১৭৫)
বিলাপ করে চেহারায় প্রহার
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে চেহারায় প্রহার করে এবং (জামার) পোশাক ছিঁড়ে ফেলে এবং আইয়ামে জাহেলিয়াতের মতো ডাকাডাকি করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, হাদিস: ১২৯৭)
মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র উত্তোলন
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমাদের (মুসলমানদের) বিরুদ্ধে অস্ত্র উত্তোলন করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৮৭৪)
মুসলমানদের সঙ্গে প্রতারণা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমাদের (মুসলমানদের) সঙ্গে প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬৪)
রাসুলের সুন্নত থেকে মুখ ফেরানো
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমার সুন্নাত (রীতিনীতি) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৪০১)
অন্যের জিনিস নিজের দাবি করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এমন জিনিসের দাবি করে, যা তার নয়; সে আমার দলভুক্ত নয় এবং সে যেন তার আবাসস্থল জাহান্নাম বানিয়ে নেয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৩১৯)
নারী-পুরুষ একে অন্যের সাদৃশ্য গ্রহণ করা
আল্লাহতায়ালা নারী-পুরুষ দুটি জাতিকে ভিন্ন ভিন্ন আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। এটা আল্লাহতায়ালার কুদরতের অনন্য বহিঃপ্রকাশ। এই কুদরত যারা অগ্রাহ্য করে নিজের আকৃতিকে অন্য লিঙ্গের সঙ্গে সাদৃশ্য করে, তার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে পুরুষ নারীদের সাদৃশ্যতা গ্রহণ করে, আর যে নারী পুরুষদের সাদৃশ্যতা গ্রহণ করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৬৮৭৫)