মাহরাম কারা? নারী ও পুরুষের মাহরাম কয়জন
দৈনিকসিলেটডেস্ক
মাহরাম আরবি শব্দ। এটি আরবি হারাম শব্দ থেকে এসেছে। ইসলামি পরিভাষায় যাদের বিয়ে করা হারাম বা অবৈধ এবং দেখা করা বা দেখা দেয়া জায়েজ বা বৈধ, তাদের মাহরাম বলা হয়।
রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তা, স্তন্যদানের সম্পর্ক এবং বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে নারী পুরুষ পরস্পরের মাহরাম হয়। পরস্পরের সঙ্গে দেখা দেওয়া জায়েজ হয়।
পবিত্র কুরআনের চতুর্থ সুরার নাম নিসা। নিসা মানে নারীজাতি।
এ সুরায় মহান আল্লাহ সমাজে নারী-পুরুষের সম্পর্কের সীমা, নারীদের উত্তরাধিকার বণ্টনের নিয়ম-কানুনসহ নারীসমাজের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় বর্ণনা করেছেন যার কারণে এ সুরার নামকরণ করা হয়েছে ‘সুরাতুন নিসা’।
নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃ পুরুষ যাদেরকে বিয়ে করেছে, তোমরা তাদেরকে বিয়ে করো না, তবে পূর্বে যা সংঘটিত হয়েছে (সেটা ক্ষমা করা হলো) নিশ্চয় তা ছিল অশ্লীল, মারাত্মক ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট পন্থা। (সুরা নিসা: ২২)
তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা, মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইয়ের মেয়ে, বোনের মেয়ে, দুধমা, দুধবোন, শাশুড়ি ও তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সঙ্গে সংগত হয়েছ তার আগের স্বামীর ঔরসে তার গর্ভজাত মেয়ে, যারা তোমাদের অভিভাবকত্ব আছে, তবে যদি তাদের সঙ্গে সংগত না হয়ে থাক, তাতে তোমাদের কোনো অপরাধ নেই। আর তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তোমাদের ঔরসজাত ছেলের স্ত্রী ও দুই বোনকে একত্র করা, আগে যা হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা নিসা: ২৩)
আর নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া সব সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এগুলো আল্লাহর বিধান। উল্লিখিত নারীরা ছাড়া অন্য নারীকে অর্থব্যয়ে বিয়ে করতে চাওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হলো, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য নয়। তাদের মধ্যে যাদেরকে তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত দেনমোহর অর্পণ করবে। দেনমোহর নির্ধারণের পর কোনো বিষয়ে পরস্পর রাজি হলে তাতে তোমাদের কোনো দোষ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সুরা নিসা: ২৪)
কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী নারী-পুরুষদের জন্য এমন ব্যক্তি ১৪জন। এই মানুষদের সঙ্গে দেখা দেওয়া জায়েজ, পর্দা ফরজ নয়, তবে এদের বিয়ে করা যাবে না। এখানে তাদের পরিচয় তুলে ধরা হল-
পুরুষের জন্য মাহরাম ১৪ জন
তারা হলেন- মায়ের সমপর্যায়ের ৫ জন
১. মা
২. ফুফু (বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ফুফুও এর অন্তর্ভুক্ত)
৩. খালা (বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় খালাও এর অন্তর্ভুক্ত)
৪. শাশুড়ি (স্ত্রীর আপন মা), দাদী শাশুড়ি, নানী শাশুড়ি এবং তাদের ঊর্ধ্বতন মহিলাগণ এবং স্ত্রীর দুধ মা, দুধ দাদী এবং দুধ নানী।
৫. দুধ-মা (যে মা ছোট বেলায় দুধ খাইয়ে ছিলেন)
বোনের সমপর্যায়ের ৫ জন
৬. নিজের বোন (সহোদরা, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয়-সকল বোন এর অন্তর্ভুক্ত)
৭. নানি (মায়ের মা)
৮. দাদি (বাবার মা)
৯. নাতনি (আপন ছেলে ও মেয়ের কন্যা)
১০. দুধ-বোন
মেয়ের সমপর্যায়ের ৪ জন
১১. মেয়ে
১২. ভাতিজি (আপন ভাই-এর মেয়ে)
১৩. ভাগ্নি (আপন বোনের মেয়ে)
১৪. ছেলের বউ
এসব ব্যক্তি ছাড়া পুরুষরা বাকি সবার সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। তবে স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় স্ত্রীর আপন বোনকে বিয়ে করা যাবে না। আবার তার সঙ্গে দেখাও করা যাবে না।
নারীদের মাহরাম ১৪ জন
তারা হলেন- বাবার সমপর্যায়ের ৪ জন
১. বাবা
২. চাচা
৩. মামা
৪. শ্বশুর
ভাইয়ের সমপর্যায়ের ৫ জন
৫. সহোদর ভাই
৬. নিজ দাদা
৭. নিজ নানা
৮. নিজ নাতি
৯. দুধ-ভাই
ছেলের সমপর্যায়ের ৫ জন
১০. ছেলে
১১. ভাইয়ের ছেলে
১২. বোনের ছেলে
১৩. মেয়ের জামাই
১৪. দুধ-ছেলে