তিব্বতে ইয়ারলুঙ সাংপাও নদীতে বাঁধ নির্মাণ, শঙ্কায় দিল্লি
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
তিব্বতের ইয়ারলুঙ সাংপাও নদীতে চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ হাইড্রোপাওয়ার বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়ার পর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। চীনের পরিকল্পনার পেছনে ভূরাজনৈতিক মারপ্যাঁচ দেখছেন বিশ্লেষকরা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৬০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম এই বাঁধ আকারে চীনের সবচেয়ে বড় বাঁধের তিন গুণ হবে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধির জয়সওয়াল বলেন, ‘চীনের এই প্রকল্প প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি করবে।’
এই বাঁধের কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মতো নিম্নাঞ্চলগুলোতে খরা, বন্যা ও নাব্যতা সংকট দেখা দিতে পারে বলে ধারণা তার।
ভারতের অরুণাচল প্রদেশসংলগ্ন অঞ্চলে এই বাঁধ নির্মাণ করা হবে। তবে এই এলাকা নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেশ পুরোনো।
ভারতের অবসরপ্রাপ্ত ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার শিবশংকর মেনন এ বিষয়ে বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক জটিলতা ভারতের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ভারত ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আলোচিত এই জলবিদ্যুৎ বাঁধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিব্বতের এই ইয়ারলুঙ সাংপাও নদী ভারত ও বাংলাদেশের ব্রহ্মপুত্র হিসেবে পরিচিত।
ভাটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের পানির চাহিদা মেটাতে এই নদীর প্রবাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এদিকে ভারতের সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই বাঁধের কারণে প্রকৃতির ক্ষতি হতে পারে- তা মানতে নারাজ বেইজিং।
তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন ভিন্ন কথা। এই বাঁধের কারণে ভাটি এলাকায় ‘নেতিবাচক প্রভাব পড়বে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পরিবেশ ও ভৌগোলিক তথ্য পরিষেবা কেন্দ্রের কর্মকর্তা ফিদা খান।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের অরুণাচল প্রদেশে ১১ গিগাওয়াট ক্ষমতার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে দিল্লি। তবে এই প্রকল্পেরও বিরোধিতা করেছেন স্থানীয়রা।
দক্ষিণ এশিয়ার নদী ব্যবস্থাপনায় অসামঞ্জস্য নতুন কিছু নয়। এই ধারাবাহিকতায় নতুন শঙ্কার সৃষ্টি করল তিব্বতে চীনের বাঁধ প্রকল্প। সূত্র: ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস