বিশ্বনাথে সোনালী আবরণে ঢাকা মাঠ: চলছে ধান কাটার উৎসব

সমুজ আহমদ সায়মন বিশ্বনাথ থেকে
দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ সোনালী আবরণে ঢাকা।দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার মহোৎসব।নতুন ধানের বাম্পার ফলনে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কৃষককূলে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি।বৈশাখের রোদ বৃষ্টির খেলার মধ্যে সেই সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন কৃষকরা।সাথে সঙ্গ দিচ্ছেন স্কুল পড়ুয়া ছেলেরা ও গৃহিনীরা।ধান কর্তন,বাড়ির আঙিনায় কিংবা শুকনো ও উঁচু স্থানে নেওয়া,মাড়াই-জাড়াই করে রোদে শুকানো এবং গোলায় তোলার মহা ব্যস্ততায় রয়েছেন তারা।অনুকূল আবহাওয়া,কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা,সময়মতো সার সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এবার উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে কৃষাণ-কিষাণীদের ব্যস্ত সময় কাটছে।কৃষকরা ধান কেটে জমির পার্শ্ববর্তী মাঠে সাজিয়ে রাখছেন।শ্রমিক সংকট থাকায় পরিবারের ছোট-বড় সদস্যদের নিয়ে নিজেরাই কাটছেন ধান। জমিতে পানি জমায় অনেক এলাকায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার। কৃষাণীরা মাড়াই-ঝাড়াই হওয়া ধানের খড় কুটা পরিস্কার করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন। কেউ আবার শুকানোর পর গোলায় তোলার জন্য ধান বস্তায় ভরছেন।কেউ আবার মাঠজুড়ে রোদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন সোনালী খড়।তবে এ বছর শ্রমিক সংকট ও শ্রমিকের বাড়তি মুজুরী ভাবাচ্ছে কৃষকদের।অনেকেই আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে অন্য যেকোন বছরের চেয়ে বোরোর বাম্পার ফলন ঘরে তুলবেন এমনটাই আশা করছেন।
কৃষি অফিস কর্তৃক জানা যায়, চলমান বোরো মৌসুমে উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় ৭২৯৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ব্রি-ধান ৮৯ ব্রি-ধান ৯২ ও ৭৪ জাতের ধান চাষ করেছেন তারা।
কৃষক কবির মিয়া বলেন, নিজের এবং পরিবারের পুরুষ সদস্যদের পরিশ্রমে এবার ভাল ফলন হয়েছে। কিছুটা ধান কাটা হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট ও শ্রমিকের বাড়তি মুজুরী এবং যেকোন সময় আবহাওয়া প্রতিকূলে যেতে পারে সে বিষয়টিও চিন্তায় ফেলেছে আমাদের।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় বলেন, এবারে বোরো ধানের অবস্থা সন্তোষজনক। বর্তমানে ধান কর্তন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে স্বল্প জীবনকালীন ধান এ কর্তনের আওতায় রয়েছে। যে সব ধান কাটা হচ্ছে হেক্টর প্রতি প্রায় সাড় ৫ টন থেকে ৬ টনের মতো ফলন পাওয়া যাবে।আশাকরি মৌসুম শেষে কৃষকরা ভাল ফলন পাবেন।