এক যুদ্ধে সাত পুত্রসহ শহীদ হওয়া সাহাবি
আবদুল্লাহ ইবনে হানজালা (রা.)-এর পিতা ছিলেন উহুদের শহীদ, গাসিলুল মালায়িকা হানজালা (রা.)। দাদার নাম আবু আমির, যাঁর উপাধি ছিল ‘আর-রাহিব’। সেই সূত্রে তাঁকে ইবনে রাহিব বলেও ডাকা হতো। বংশ পরিচয় তাঁর পিতার জীবনী অংশে উল্লেখ করা হবে ইনশাআল্লাহ।
মা ছিলেন মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের কন্যা জামিলা (রা.)। (সূত্র : আল-ইসতিআব : ৩/৮৯২, আত-ত্বাবাকাতুল কুবরা : ৫/৪৮, তাহজিবুল কামাল : ১৪/৪৩৬)
হানজালা (রা.) উহুদের যুদ্ধের আগে স্ত্রী জামিলা (রা.)-এর সঙ্গে মিলিত হন এবং সেই মিলনে আবদুল্লাহ মাতৃগর্ভে স্থানান্তরিত হন। তখন হিজরতের ৩২ মাস অতিক্রান্ত, মাসটি ছিল শাওয়াল। উহুদের যুদ্ধে পিতা শহীদ হন এবং ৯ মাস পর আবদুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন।
রাসুল (সা.)-এর ইন্তেকালের সময় তিনি সাত বছর বয়সী ছিলেন, এ তথ্য ইবনে সাদের। তবে ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন, তাঁর জন্ম উহুদের সাত মাস পর, অর্থাৎ ৪ হিজরির রবিউল আউয়াল বা রবিউস সানিতে। (সূত্র : আত-ত্বাবাকাতুল
কুবরা : ৫/৪৮-৪৯)
তিনি হাদিস বর্ণনা করেছেন সরাসরি রাসুল (সা.) থেকে। সাহাবিদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) ও উমর (রা.)-এর কাছ থেকেও বর্ণনা রয়েছে।
কা’ব আল-আহবার (রহ.) থেকেও হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তাঁর শিষ্য তাবেঈদের মধ্যে রয়েছেন : আসমা বিনতে জায়েদ ইবনে খাত্তাব [উমর (রা.)-এর ভাতিজি], আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াজিদ আল-খাতমী (রহ.), কায়েস ইবনে সাদ (রহ.), আব্বাস ইবনে সাহল (রহ.)। (তাহজিবুল কামাল : ১৪/৪৩৭)
প্রত্যেক নামাজের আগে অজু করা আবশ্যক ছিল। এ বিধান রহিত হওয়ার বিষয়ে একটি হাদিস প্রায় সব হাদিসগ্রন্থে রয়েছে। তা বর্ণনা করেছেন মহিলা তাবেঈ আসমা বিনতে জায়েদ (রহ.)।(আবু দাউদ : ১/৭; মুসনাদে আহমদ : ৩৬/২৯১, হাদিস : ২১৯৬০; ইবনে খুযাইমা : ১/১১, ৭১, হাদিস : ১৫, ১৩৮)
‘হাররার ট্র্যাজেডি’তে শহীদ
৬৩ হিজরির জিলহজ মাসে ইয়াজিদের বাহিনী আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রা.)-এর বিরুদ্ধে মদিনায় আক্রমণ চালায়। ইতিহাসে তা ‘হাররার ট্র্যাজেডি’ নামে পরিচিত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে হানযালা (রা.) মদিনাবাসীদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেই যুদ্ধে অসংখ্য মানুষ শহীদ হন। তাঁর নিজ সন্তানদের মধ্যে আবদুর রহমান, হারিস, হাকাম, আসিমসহ সাতজন শহীদ হন, এই দৃশ্য তিনি নিজ চোখে দেখেন। পরে তিনিও যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে পিতার মতো শাহাদাত বরণ করেন। ঘটনাটি ঘটে ৬৩ হিজরির জিলহজ মাসের ২৭ তারিখে। (সূত্র : আত-ত্বাবাকাতুল কুবরা : ৫/৪৯-৫০, ক্র. ৬৪৩; তাহজিবুল কামাল : ১৪/৪৩৭)