তরুণদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি উদ্বেগজনক, প্রয়োজন দ্রুত পদক্ষেপ
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও বায়ুদূষণ—এসব কারণে দেশের তরুণদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপসহ অসংক্রামক রোগের হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, তরুণ প্রজন্মকে এই স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
মঙ্গলবার অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি ও বাংলাদেশের যুব সমাজ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব মতামত উঠে আসে। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহায়তায় অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস’ সোসাইটি, প্ল্যাটফরম ডক্টরস ফাউন্ডেশন, ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন, ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশ, কাশফুল ফাউন্ডেশন ও গিভ বাংলাদেশ। এবারের যুব দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রযুক্তি নির্ভর যুব শক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি’।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ, যার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ অন্যতম। এসব রোগে অকাল মৃত্যুর হার ১৯ শতাংশ। এখনই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এসব রোগের প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নেবে। এতে কর্মক্ষম জনশক্তি হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক খাতে বাড়বে চাপ।
বক্তারা জানান, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে তৃণমূল পর্যায়ে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে দেশের সব কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. গীতা রানী দেবী বলেন, ‘সরকার উচ্চ রক্তচাপ মোকাবেলায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ সরবরাহ এবং তরুণদের স্বাস্থ্য কার্যক্রমে সম্পৃক্তকরণ অন্তর্ভুক্ত। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলে তরুণদেরও এ বিষয়ে সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে।’
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মারুফ হক খান বলেন, ‘তরুণদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের হার দ্রুত বাড়ছে। সুস্থ প্রজন্ম গড়তে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা জরুরি।’
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের এবং সঞ্চালনা করেন কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যুব সংগঠনের সদস্যসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন এই ভার্চুয়াল আয়োজনে।