আতিথেয়তায় মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুপম দৃষ্টান্ত
দানশীলতা ও উদারতা ছিল মহানবী (সা.)-এর চরিত্রের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তাঁর এই গুণ ছিল সর্বজনবিদিত। হাদিস এসেছে, ‘রাসুল (সা.) সব মানুষের চেয়ে বেশি দানশীল ছিলেন।’ (সহিহ্ বুখারি)। দানশীল ব্যক্তিদের একটি বিশেষ গুণ হলো, তাঁরা অতিথিদের খুব আদর-আপ্যায়ন করেন। আরবের মানুষের মধ্যে এই গুণ ছিল সহজাত। জাহিলি যুগেও তাঁরা অতিথিদের সম্মান করতেন, যা মহানবী (সা.)-এর আতিথেয়তার আদর্শের ভিত্তি স্থাপন করে।
আতিথেয়তা মহানবী (সা.)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। তাঁর স্ত্রী খাদিজা (রা.) তাঁর গুণাবলি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘আপনি তো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করেন, অসহায় দুর্বলদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সাহায্য করেন, অতিথির সমাদর করেন এবং দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ (সহিহ্ বুখারি)। এই উক্তি থেকে বোঝা যায়, অতিথির প্রতি সম্মান প্রদর্শন রাসুল (সা.)-এর মহৎ চরিত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।
আতিথেয়তার গুরুত্ব বর্ণনা করে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখে, সে যেন অতিথির সমাদর করে।’ (সহিহ্ বুখারি)। হাদিসে আরও এসেছে, ‘রাতে আসা অতিথির আপ্যায়ন করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। আর যদি তার কাছে অতিথি ভোর পর্যন্ত থাকে, তবে সেই সময়ের আপ্যায়নও মেজবানের ওপর অতিথির পাওনাস্বরূপ। এখন চাইলে সে এই পাওনা শোধও করতে পারে, আবার ইচ্ছা করলে তা ছেড়েও দিতে পারে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)। এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, অতিথির হক কত বড়।
আমাদের সাধ্য অনুযায়ী অতিথির জন্য উত্তম খাবারের ব্যবস্থা করা উচিত। পবিত্র কোরআনে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর আতিথেয়তার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তিনি অবিলম্বে আপ্যায়নের জন্য একটি ভুনা করা বাছুর নিয়ে এলেন।’ (সুরা হুদ: ৬৯)। আমাদের জীবনেও এই গুণ ধারণ করা জরুরি। এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি যেমন লাভ করা যায়, তেমনি সমাজে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বাড়ে।