মাঠে মাঠে সোনালি ধান, বাম্পার ফলন পাওয়ার আশা
নওগাঁর ধামইরহাটে ২১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। গত বোরো মৌসুমে ধান চাষ করে কৃষক ক্ষতির মুখে পড়লেও এবার নতুন উদ্যোমে আমন চাষ করেছেন তারা। আর রেকর্ড পরিমাণ ধান পাবেন বলেও আশা কৃষকদের। তবে ধানের ন্যায্যমূল্য নিয়ে সংশয় রয়েছে তাদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর আদি বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ধামইরহাট উপজেলায় এবার কৃষক ২১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন কৃষক। অধিকাংশ জমিতে কৃষক স্বর্ণা ৫ জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। এছাড়া ত্বরা স্বর্ণা, বিনা-১৭, কাটারীভোগ, ব্রিধান ৩৪, ৪৯, ৫১, ৭৫, ৮০, ৮৭, ৯০, ৯৩, ৯৪, ৯৫, ১০০।
এ ছাড়া বিনা ধান-১৭, ২২, ২৬ জাতের ধানের চাষ করা হয়েছে। অনেক জমিতে পোলাওয়ের ধান হিসেবে পরিচিত সুগন্ধি চিনি আতপ, গোল্ডেন আতব এবং জিরাশাইল জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। চিনি আতপ ধানের বাজারমূল্য সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে মাঠে মাঠে ধান পাকতে শুরু করেছে।
এবার ধানের রোগবালাই অন্যবারের তুলনায় কম। ধান উৎপাদনে সার ও কীটনাশকের তেমন কোনো সংকট ছিল না। বাদামি গাছফড়িং (কারেন্ট পোকা) পোকার আক্রমণ থেকে ধানগাছ রক্ষায় কৃষকরা আগাম ব্যবস্থা নেওয়ায় এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আসে।
সূত্র জানায়, গত বোরো মৌসুমে কৃষক ধানের দাম ভালো পাওয়ায় নতুন উদ্যমে বেশি জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। বিনা ১৭ ধান আগাম চাষ করা হয়েছে। আগাম জাতের ধান কেটে কৃষকরা সেই জমিতে আলু, সরিষা ও রবিশস্য চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
ধামইরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রায় পাঁচ একর জমিতে স্বর্ণা ৫ এবং সুগন্ধি আতপ ধান চাষ করেছেন। একর প্রতি তার ফলন প্রায় ৬০ মণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পৌরসভার চকউমর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি এবার অন্যান্য ধানের সঙ্গে কাটারীভোগ ধান চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। জয়জয়পুর গ্রামের কৃষক আনিসুর রহমান বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। স্বর্ণা ৫ জাতের ধান চাষ করেছেন। আশা করছি ফলন ভালো হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, আমন মৌসুমে কৃষক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উঠোন বৈঠক, হাট-বাজার সভা এবং দলভিত্তিক কৃষক সমাবেশ, গ্রাম কৃষক বন্ধু প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা, লিফলেট বিতরণ, কৃষি প্রদর্শনীসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের আমন ধানের পোকামাকড় সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। ফলে এবার আমন ধানের রোগবালাই কম। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবার এ উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।






