উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ
মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে কানাইঘাটের গুরুতর আহত রুবেল
কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির কালিনগর ধর্মটিলা গ্রামের মৃত মুদরিছ আলীর পুত্র রুবেল আহমদ মড়াই (২২) প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়লেও হামলাকারীরা উল্টো নারী নির্যাতন সহ ফৌজদারী অভিযোগ দায়ের করে আহতের পরিবারের সদস্যদের হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত অনুমান ৮ টার দিকে কালিনগর গ্রামের মাসুক আহমদের বাড়ির পাশে রাস্তার উপর অন্যদের সাথে আড্ডা দেয়ার সময় একই গ্রামের আব্দুস শুকুরের পুত্র মুস্তাকিম আহমদ (২২), মৃত জমির আলীর পুত্র আব্দুস শুকুর (৫২), আব্দুস শুকুরের পুত্র মুরসালিন (২০) সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন রুবেল আহমদ মড়াই (২২) কে পাহাড়ি গাছ কাটার ধারালো বুকি দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। আশংকা জনক অবস্থায় রুবেল আহমদ মড়াইকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। ১ মাস সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বর্তমানে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের ডাক্তারদের তত্ত¡াবধানে প্রতিদিন রুবেল আহমদ মড়াই’র শরীরের জখমের অংশ ড্রেসিং করা হচ্ছে।শরীরের একাধিক জায়গায় গুরুতর জখম থাকায় বর্তমানে সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বলে স্বজনরা জানান। এ ঘটনায় আহতের বোন ফাহিমা বেগম কানাইঘাট থানায় হামলাকারী মুস্তাকিম, আব্দুস শুকুর, মুরসালিনের নাম উল্লেখ করে আরো ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং- ১৪, তারিখ- ২৭/০৯/২০২৫ইং। মামলার পর আসামীরা পলাতক থাকা অবস্থায় রুবেল আহমদ মড়াই এর উপর হামলাকারী মামলার আসামী আব্দুস শুকুরের স্ত্রী কালিনগর গ্রামের রাবিয়া বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সিলেটে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দরখাস্ত মামলা নং- ৩৫৫/২০২৫ইং দায়ের করেন। উক্ত দরখাস্ত মামলায় গুরুতর আহত রুবেল আহমদ মড়াই ও তার ফুফাতো ভাই মিজান উদ্দিন সহ ৪ জনকে আসামী করে হয়রানীর অভিযোগ করেছেন আহতের বোন মামলার বাদী ফাহিমা বেগম সহ তাদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা। এমনকি রুবেল আহমদ মড়াই এর মামলার পরিচালনায় সহযোগিতা করার কারনে তার ফুফাতো মিজান উদ্দিনের উপর গত ২৪ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে মামলার আসামীদের বাড়ির সামনে আসামাত্র আসামীদের পরিবারের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিজান উদ্দিনের উপর হামলা করে আহত করে। এ ঘটনায় মিজান উদ্দিন বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় হামলাকারী ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আহতের বৃদ্ধ মা কুটিনা বিবি ও মামলার বাদী বোন ফাহিমা বেগম সহ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, মামলার আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় তাদের স্বজনরা উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের সহ মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজ উদ্দিন সহ কালিনগর গ্রামের আরো অনেকে জানান, রুবেল আহমদ মড়াই আব্দুশ শুকুরের মেয়ে মাহদিয়া বেগমকে পারিবারিক বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। একপর্যায়ে আব্দুশ শুকুর রুবেল আহমদের সাথে তার মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হলেও পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর আব্দুশ শুকুর ও তার পরিবারের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রুবেল আহমদ মড়াইকে গুরুতর আহত করে, যা গ্রাম সহ স্থানীয় এলাকার লোকজন জানেন। মামলার আসামীরা ঘটনার পর থেকে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে জানান।
মামলার বাদী গুরুতর আহত রুবেল আহমদের বোন ফাহিমা বগম তার ভাইয়ের অবস্থা আশংকাজনক, তার শরীরের একাধিক জায়গায় গুরুতর জখম থাকায় সে মৃত্যুর সাথে সাঞ্জা লড়ছে। ডাক্তাররা বলছেন, তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে, কিন্তু তাদের কোন টাকা-পয়সা নাই। তারপরও মামলার আসামীর পরিবারের সদস্যরা আদালতে এবং থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের হয়রানী করে যাচ্ছে। মামলার আসামীদের দ্রæত গ্রেফতার সহ মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আহতের পরিবারের সদস্যরা সিলেটের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ ও থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে আসামীদের পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ রুলে আহমদ মড়াই মাহদিয়া বেগমকে নানাভাবে অত্যক্ত করায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
আহত রুবেল আহমদ এর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এস.আই শাহ আলম বলেন, মামলার আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রাখছেন, কিন্তু তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারনে গ্রেফতার করতে বিলম্ব হচ্ছিল।






