নেপালের বিক্ষোভ নিয়ে ভারত ও চীনের প্রতিক্রিয়া কী
নেপালে জেন-জির বিক্ষোভ ও কে পি শর্মা অলি সরকারের পতন সারাবিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। জাতিসংঘ এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, তারা নেপালে বিক্ষোভকারী হতাহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে মর্মাহত। দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নেপালের নিকটতম দুই প্রতিবেশী ভারত ও চীন।
শুক্রবার দ্য প্রিন্টে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ সেপ্টেম্বর নেপালে বিক্ষোভ শুরুর একদিন পর ভারত বলেছিল, তারা ‘নেপালের ঘটনাপ্রবাহ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের ভাবনা ও প্রার্থনা পরিবার ও নিহতদের সঙ্গে আছে। ভারত নেপালকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ ও ‘প্রতিবেশী’ সম্বোধন করে বলেছে– তাদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট সবাই সংযম প্রদর্শন করবেন। ওই সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে নেপালের সহিংসতাকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে বর্ণনা করেন। ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লোকজনের মধ্যে বিভাজন রয়েছে। ভারত কি বন্ধু ও সহায়তা করতে আগ্রহী, নাকি তারা হস্তক্ষেপকারী। এ সন্দেহের কারণও আছে। নেপালের বিক্ষোভ-সহিংসতা নিয়ে দ্রুতই প্রতিক্রিয়া জানায় ভারত। যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য আছে, সেগুলো যেন সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনমুক্ত পরিবেশে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা হয়।
যা বলেছিল চীন
নেপালে রাজনৈতিক ঘটনাবলির প্রতি চীনের প্রতিক্রিয়া ছিল সতর্ক ও গণনাভিত্তিক, যা তার বৃহত্তর আঞ্চলিক কৌশলগত স্বার্থকে প্রতিফলিত করে। ২০০৮ সালের পর বেইজিং নেপালে তার কূটনৈতিক সম্পর্ক ও সদিচ্ছাকে আরও গভীর করতে নেপালের কমিউনিস্ট নেতৃত্বের সঙ্গে সাবধানতায় পদক্ষেপ নিয়েছে। এ পদক্ষেপকে এ অঞ্চলে কৌশলগত প্রভাবের একটি মূল উপাদান হিসেবে দেখা হয়েছে। কেপি শর্মা অলি ও পুষ্প কমল দাহল প্রচন্ডের মতো নেতা নেপালে জাতীয়তাবাদী অনুভূতি উস্কে দেওয়ার জন্য চীন কার্ড ব্যবহার করতে দ্বিধা করেননি। গত ১০ সেপ্টেম্বর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলে, ‘চীন ও নেপাল একে অপরের ঐতিহ্যবাহী বন্ধু ও প্রতিবেশী।’
বিলাসবহুল দুই হোটেলে আগুন কেন
নেপালে বিক্ষোভ চলাকালে হিল্টন কাঠমান্ডু ও হায়াত রিজেন্সি নামের দুটি বিলাসবহুল হোটেলে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, জেন-জির বিক্ষোভকারীরা মূলত নেপালের অভিজাতদের বিলাসী জীবনকে লক্ষ্যে পরিণত করেছেন। পুড়ে যাওয়া হিল্টন এখন বিক্ষোভে চালানো ধ্বংসযজ্ঞের প্রতীক হয়ে আছে।
একই অবস্থা হায়াত রিজেন্সিরও। ফাইভস্টার এ হোটেলটি ৩৭ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। পর্যটন যেখানে নেপালের প্রাণশক্তি, সেখানে এ দুই হোটেল ছিল বিদেশি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় আবাসস্থল। হায়াত রিজেন্সি নির্মানে খরচ হয়েছিল ৩৪০ কোটি রুপি। ২০০০ সালে রাজা বীরেন্দ্র এটি উদ্বোধন করেছিলেন।