‘দেবদাস’ উপন্যাস রচনার শতবছর পূর্তি ‘দেবদাস’ শ্রেণি-বৈষম্যের একটি মূর্ত প্রতিচ্ছবি
দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডটকম:বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-লেখক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকী (অব.) বলেছেন, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর লেখার মাধ্যমে সমকালীন সমাজ বাস্তবতাসহ সাধারণ মানুষের জীবনে সমস্যা-সম্ভাবনা, সুখ-দু:খ অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি প্রেম-ভালোবাসা এবং বিরহ তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে শিল্পীর তুলির ন্যায়। তেমনি প্রেম-ভালোবাসার চিরায়ত রূপে সমকালীন সমাজের মধ্যে বিদ্যমান শ্রেণি-বৈষম্য প্রকটভাবে ধরা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে শরৎচন্দ্রের ‘দেবদাস’ বাংলা সাহিত্যে এক অনবদ্য ভালোবাসার উপন্যাস ‘দেবদাস’ হয়ে টিকে আছে। বিংশ শতাব্দীতে ‘দেবদাস’ উপন্যাস ভালোবাসার পাশাপাশি শ্রেণি-বৈষম্যের একটি মূর্ত প্রতিচ্ছবি।
কৈতর সিলেট আয়োজিত অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘দেবদাস’ রচনার শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কৈতর সিলেট-এর চেয়ারম্যান গল্পকার সেলিম আউয়ালের সভাপতিত্বে শনিবার সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কবি, গবেষক সাময়িকী ‘কালের ধ্বনি’ সম্পাদক ইমরান মাহফুজ, আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেমুসাসের সহ সভাপতি, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ বশিরুদ্দিন, কবি ও ঔপন্যাসিক মুহিত চৌধুরী, কেমুসাসের পৃষ্ঠপোষক সদস্য সালেহ আহমদ খসরু, কবি-প্রকাশক রাজীব চৌধুরী এবং মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঔপন্যাসিক আলেয়া রহমান।
সিলেট এক্সপ্রেসের স্টাফ রিপোর্টার তাসলিমা খানম বীথির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ সলিম মুহাম্মদ আব্দুল কাদির, লিটলম্যাগ পলিমাটি সম্পাদক কবি বাশিরুল আমিন, কবি নাঈমা চৌধুরী, কবি মাহফুজ জোহা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ সাঈদ আহমদ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে কবি-গবেষক ইমরান মাহফুজ বলেন, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দেবদাস’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে সমকালীন সমাজের একটি নিগূঢ় বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। মানুষের মধ্যে যে শ্রেণিগত সমস্যা বিদ্যমান তাই ‘দেবদাস’ উপন্যাসে প্রেম-বিরহের আড়ালে তুলে ধরেছেন। শুধু প্রেম-ভালোবাসার ক্ষেত্রে নয়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যে সাধারণ মানুষের জীবনের সুখ-দু:খের প্রতিচ্ছবি এসেছে শিল্পীর ন্যায়। এখানেই তাঁর উপন্যাসের সার্থকতা। শরৎচন্দ্রকে জানা এবং তাঁর চর্চায় এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।
কবি মুহিত চৌধুরী বলেন, অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রকে আরো বেশী করে অধ্যয়ন করতে হবে, তাহলে আমরাই সমৃদ্ধ হবো। শরৎচন্দ্র তার রচনায় তৎকালীন সমাজের চিত্র অত্যন্ত বলিষ্টভাবে তোলে ধরেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে কৈতর সিলেট-এর চেয়ারম্যান গল্পকার সেলিম আউয়াল বলেন, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এমনই এক কথাশিল্পী। যার রচিত ‘দেবদাস’ উপন্যাসের আবেদন এই শতবছরেও ফুরিয়ে যায়নি। শুধু দেবদাস নয়, শরৎচন্দ্রের প্রতিটি সৃষ্টিকর্মই আমাদের হৃদয়কে নাড়া দেয়। পাশাপাশি চিন্তাকে করে আরো বেশি প্রসারিত।