ভিত্তিহীন মেসেজ ছড়ানো জঘন্য গুনাহ
মুহাম্মদ তাকরীম
সমাজে ভুয়া মেসেজ ছড়ানোর প্রবণতা বেশ পুরনো। আগের দিনে কাগজে ফটোকপি করে বিভিন্ন ভুয়া মেসেজ ছড়ানো হতো। এটা করা হতো মূলত মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। সেখানে যে ধরনের কথা লেখা থাকত তা অনেকটা এ রকম—রাসুল (সা.) মদিনা শরিফের এতজন আলেমকে স্বপ্নে দেখিয়েছেন, এই অমুক কাজ করলে জান্নাতে যাওয়া সহজ হবে। কাগজটি ফটোকপি করে ২০ জন মানুষের মধ্যে বিলি করে দিলে এক সপ্তাহের মধ্যে কোনো সুসংবাদ পাবে। আর তা না করলে এক সপ্তাহের মধ্যে কোনো বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।
অনেকেই সরল বিশ্বাসে এ ধরনের কাজে আত্মনিয়োগ করে সেই ভুয়া চিঠি ছড়ানোর ব্যাপারে সহযোগিতা করত। এখন আর এসব কাজ ফটোকপি কাগজে সীমাবদ্ধ নেই, এখন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে এসব তথ্য ছড়ানো হয় কিছু লাইক, কমেন্ট, সাবস্ক্রাইব ইত্যাদি পাওয়ার জন্য।
নবীজি স্বপ্নযোগে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে মিথ্যা মেসেজ ছড়ানো জঘন্য পাপ, যা নবীজি (সা.)-এর ওপর মিথ্যারোপ করার শামিল। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর মিথ্যারোপ করল, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়। (তিরমিজি, হাদিস : ২৬৬১)
অতএব, যারা এ ধরনের ভিত্তিহীন মেসেজ তৈরি করবে এবং যারা এ ধরনের মেসেজগুলো ছড়াবে প্রত্যেকেই এই মিথ্যা ছড়ানোর গুনাহে লিপ্ত থাকবে। এই চেইন যত দিন চালু থাকবে তত দিন মেসেজ তৈরিকারী ও প্রচারকারীরা গুনাহগার হবে। এমনকি সে যদি মারাও যায়, এর গুনাহ তার কবরে পৌঁছাতে থাকবে। কেননা হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে ডাকবে সে তার অনুসারীর সমান সওয়াব পাবে, অথচ অনুসরণকারীর সওয়াব কমানো হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে ডাকবে সে তার অনুসারীর সমান পাপে জর্জরিত হবে, তার অনুসারীর পাপ মোটেও কমানো হবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬০৯)
অতএব, এ ধরনের মেসেজ পেলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এবং এগুলো শেয়ার করারও প্রয়োজন নেই। এমনকি ইউটিউবারের কথামতো, ‘যদি মুসলিম হয়ে থাকো, তাহলে ভিডিওতে লাইক দিয়ে সাবস্ক্রাইব করো এবং শেয়ার করো’ জাতীয় কথা শুনে প্রভাবিত হওয়ার কিছু নেই। সামান্য কিছু লাইক-কমেন্টের জন্য এ রকম করা অনুচিত। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ ধরনের কাজ করা ও এসব কাজে অংশীদার হওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।