শায়েস্তাগঞ্জের সেই ওসি সাময়িক বরখাস্ত, রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত

নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের শায়েগঞ্জের ওলিপুরে ৩ শিল্প কোম্পানির কাছে চিঠি দিয়ে সাড়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা শায়েস্তাগঞ্জের ওসি নাজমুল হক কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ সদর দফতর। বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান ইন্সপেক্টর জেনারেল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপি এম স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর তাকে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
সোমবার (১৬ অক্টোব) পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর (পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট-২) থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেছেন পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট-২ এর এআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ নাজমুল হক কামাল এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় নিয়ম-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ড, অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) মোতাবেক অভিযুক্তকে এতদ্বারা তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।আরও বলা হয় বিধি মোতাবেক খোরাকী ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। এর আগে আসন্ন দুর্গাপূজা ও কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে অতিথিদের আপ্যায়ন বাবদ তিনটি কোম্পানির কাছে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি নাজমুল হক কামালের বিরুদ্ধে। ওসি নাজমুল হক স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রে লেখা রয়েছে– শারদীয় দুর্গাপূজা অসাম্প্রদায়িকভাবে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন এবং সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য শায়েস্তাগঞ্জ থানায় পূজা সংক্রান্ত কমিটি বৈঠকের আয়োজন করেছে। এতে শনিবার পূজা কমিটির সভাপতি, সহসভাপতি, কমিটির অন্যান্য সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। এ বৈঠকে আপনার উপস্থিতি একান্ত কাম্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের নাশতা, আপ্যায়নে ৩০০ প্লেট কাচ্চি বিরিয়ানি, ৩০ কেজি জিলাপি, ৩০ কেজি মিষ্টি, ৩০০ পিস দই, ৫০ বোতল পানি ও নানা পদের ফল কেনা বাবদ এক লাখ এবং আগামী ২৮ অক্টোবর কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ৫০০ লোকের নাশতা, আপ্যায়নের জন্য ৫০০ প্লেট বিরিয়ানি, ব্যানার-ফেস্টুন, মাইকিং, ৫০০টি ফিল্ড ক্যাপ, মিষ্টি, ৫০০ পিস দই ও ৫০০ বোতল পানি কিনতে আড়াই লাখ টাকা করে চেয়েছেন ওসি। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় গত শনিবার পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামসুল হকের নেতৃত্বে সদর সার্কেলের এএসপি খলিলুর রহমান ও এসপি কার্যালয়ের বিশেষ শাখার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম সহ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করলে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এদিকে ওসির সাক্ষরিত চিঠি দিয়ে কোম্পানীর কাছে চাঁদা দাবীর ঘটনা মিথ্যে দাবী করে ওসি নাজমুল হক কামাল বলেন, তার সাক্ষর একটি কুচক্রী মহল সুপার এডিটিং করে অপপ্রচার করছে।
তিনি এ ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করেন। ওসি বলেন, আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। প্রকৃতপক্ষে আমি কোন কোম্পানির কাছে অর্থ দাবি করিনি। কোম্পানির কোন অভিযোগও নেই। কিন্তু অভিযোগ ছাড়া একটি কুচক্রী মহল সাক্ষর সুপার এডিটিং করে প্রচার করছে।