মতিউরের ‘আপন ভূবনে’চলে অসামাজিক কর্মকাণ্ড
![](https://dainiksylhet.com/images/icon.jpg)
দৈনিকসিলেটডেস্ক
ছাগলকাণ্ডের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের নামে পাওয়া গেল গাজীপুরে ৬০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত রিসোর্ট। ওই রিসোর্টে সারা বছরই চলে আসামজিক কাযকলাপ। ‘আপন ভূবন ‘ নামের পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট ও রিসোর্ট গাজীপুর মহানগরীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের খিলগাঁও এলাকায়।
পূবাইলে ওই রিসোর্টে গিয়েও অসামাজিক কার্যকলাপের প্রমাণও পাওয়া গেল। লতাপাতা গাছ দিয়ে ঘেরা ঝুপসি ঘরের ভেতরে অল্প বয়সের ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন অসামাজিক অঙ্গভঙ্গীতে দেখা যায়।
পার্কের কার্মকর্তা,কর্মচারী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী লায়লা কানিজ অনেক আগে থেকেই টঙ্গী এলাকায় আসা যাওয়া ছিল। সেই সূত্রধরে স্থানীয় প্রভাবশালী আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে রাজধানীর উত্তরা থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূবাইলের খিলগাঁও এলাকায় মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে ৩৫ বিঘা জমি ক্রয় করেন আমিনুল। পরে আরও কিছু জমি ক্রয় এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে জমি বাৎসরিক ভাড়া নিয়ে ৬০ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করেন ‘আপন ভূবন’ নামে পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট। সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে বিলাসবহুল কটেজ ও বিভিন্ন রাইডসহ অনেক স্থাপনা।
সেখান আছে ১৮টি কটেজ। প্রতিটি এক রাতের জন্য ৭ হাজার টাকা। এছাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকার টিকেট কেটে সারাদিন সেখানে সময় কাটানো যায়। আছে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও।
পার্কটি দেখাশুনার জন্য নিয়োজিত আছেন একজন তত্ত্বাবধায়কসহ ১২ জন কর্মচারী। পার্কে ঘুরে দেখার জন্য তেমন কিছু না থাকলেও ঢাকার কাছে সকাল-সন্ধ্যা সময় কাটানোর জন্য এবং অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য খুবই পরিচত লাভ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোচালক খোরশেদ আলম বলেন, এখানে জমি কিনার সময় মতিউর রহমান বলেছিলেন শিল্প কারখানা করবেন। যার কারণে মানুষ আগ্রহ হয়ে জমি বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি এখানে পার্ক তৈরি করেন।
‘আপন ভূবনে’ প্রবেশ করতেই গেটে বসে থাকা আব্দুর রশিদ বলেন, ভেতরে প্রবেশ করতে হলে ১০০ টাকা দিয়ে টিকেট নিতে হবে। আপন ভূবনের মালিক মতিউর রহমান স্যার। আগে তিনি প্রতি সপ্তাহেই এখানে আসতেন। তবে তার স্ত্রী খুবই কম আসেন।
তিনি আরও বলেন, পার্কটি চালু হয়েছে প্রায় ১২ বছর হয়ে গেছে। পার্কের পাশেই আমার বাড়ি থাকায় যেদিন পার্কটি চালু হয়েছে সেদিন থেকেই এখানে কাজ করছি।
পার্কের ভেতরে একটি ক্যান্টিন চালান মাসুদ মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, এ পার্কের মালিক মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী লায়লা কানিজ। দুইজনেরই এখানে আসা যাওয়া আছে।
আপন ভূবনের তত্ত্বাবধায়ক মো. রাজিব মিয়া বলেন, এখানে ৬০ বিঘা জমি রয়েছে। আপনি এখানে যত বড় আয়োজনই করতে চান আমরা ব্যবস্থা করে দিতে পারব। এর জন্য জন প্রতি ২ হাজার টাকা করে দিতে হবে। আলাদা কটেজ ভাড়া নিতে হবে। পার্কটির মালিক কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটির মালিক মতিউর রহমান আপনারা তাকে চিনবেন না।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ঢাকার বড় পার্টিরা জমি কিনতে আসলে স্থানীয় একজনের সহযোগিতা লাগে। সেই হিসেবে তাকে আমি এখানে সহযোগিতা করেছি। এখন এখানে জমির মূল্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা কাঠা হলেও তিনি যখন জমি কিনেছেন তখন ছিল ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা কাঠা।-যুগান্তর