বড়লেখায় চা শ্রমিক গোপাল হ ত্যায় জামায়াতের নিন্দা
দৈনিকসিলেটডেস্ক
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গোপাল বাক্তি হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা জামায়াত। রোববার রাতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তারা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে জামায়াতের জেলা আমীর প্রকৌশলী মো. শাহেদ আলী ও জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে এভাবে নিরীহ মানুষ হত্যা কাঙ্খিত নয়। অবিলম্বে এ ধরনের হত্যা বন্ধ করতে হবে এবং গোপাল হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, নিহত গোপালের পরিবারকে তাৎক্ষণিক দেখতে যান জামায়াতের জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান ও বড়লেখা-জুড়ী সংসদীয় আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম। তারা নিহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সকালে চা শ্রমিক গোপাল বাক্তি-সহ আরও কয়েকজন শ্রমিক বাঁশ কেটে আনতে পাথারিয়া পাহাড়ের দুর্গম জঙ্গলে যান। সেখান থেকে রাত পর্যন্ত বাড়ি ফেরেননি গোপাল। বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রবিবার ভোরের দিকে তারা খবর পান বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের বিওসি টিলা বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলারের (নম্বর-১৩৯১ ও ১৩৯২) মধ্যবর্তী জিরো লাইনের গভীর জঙ্গলে একটি লাশ পড়ে আছে। খবর পেয়ে রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিজিবি ও থানা পুলিশ স্বজনদের নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে নিহত গোপালের লাশ শনাক্ত করেন। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত গোপাল বড়লেখা উপজেলার নিউ সমনবাগ চা বাগানের মোকাম সেকশনের সাবেক ইউপি সদস্য অকিল বাক্তির ছেলে।
স্বজনদের অভিযোগ, অসাবধানতাবশত সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে গেলে গোপাল বাক্তিকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এসময় তার সাথে আরও কয়েকজন শ্রমিক ছিল। তারা বিএসএফের গুলির ভয়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। বিজিবি লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
নিহত গোপাল বাক্তির সাথে থাকা শ্রমিকদের বরাত দিয়ে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইমরান আহমদ বলেন, গোপাল বাক্তিসহ আরও কয়েকজন দিনমজুর পাহাড়ে বাঁশ কাটতে যান। এসময় বিএসএফ গুলি করলে গোপাল বাক্তি নিহত হন। তার সঙ্গে থাকা অন্যরা সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। ভয়ে, তারা মুখ খুলেনি।
নিহতের বাবা সাবেক ইউপি সদস্য অকিল বাক্তি বলেন, পাহাড়ে বাঁশ আনতে গিয়েছিল আমার ছেলে। তার সাথে আরও কয়েকজন ছিলেন। তারা সেখান থেকে এসে জানিয়েছেন, বিএসএফ তার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি এই ঘটনায় ন্যায় বিচার চান।
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মেহেদী হাসান পিপিএম জানান, রবিবার সকালের দিকে কিছু চা বাগান শ্রমিক বিজিবি বিওসিটিলা বিওপির টহল দলকে জানায় যে, সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস এর নিকটবর্তী এলাকায় একটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে তারা দেখেছেন। বিষয়টি তারা থানা পুলিশকে অবহিত করেছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে বিওসি টিলা বিওপির টহল দল তৎক্ষণিক পুলিশ ও নিহতের স্বজনসহ দ্রুত বর্ণিত স্থানে তল্লাশী অভিযান চালিয়ে সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস হতে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি লাশের সন্ধান পায়। পরে স্বজনরা নিহত গোপাল বাক্তির লাশ শনাক্ত করেন। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে, তার (নিহত গোপালের) দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নিহতের লাশ বড়লেখা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ কর্তৃক ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করা যাবে।