হাওরাঞ্চলে ৭৫ কোটি টাকার সরিষা উৎপাদনের সম্ভাবনা
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৭৫ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। সয়াবিন তেল ও পাম ওয়েলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি করার কৃষি বিভাগের বিশেষ উদ্যোগে হাওরাঞ্চলে সরিষার আবাদ বাড়িয়েছে। হাওরাঞ্চলে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করতে ১ হাজার ৩০ জন কৃষককে বিনামূল্যে বীজ-সার প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।এ ছাড়া কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, হাওরাঞ্চলে এ বছর ৬৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে ৭২০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ১ হাজার মেট্রিকটন সরিষা উৎপাদনের প্রত্যাশা কৃষি বিভাগের। যার বাজার মূল্য ৭৫ কোটি টাকা। তবে মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নেই সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে।
কৃষকরা জানান, তারা সাধারণত বারি-১৪, বারি-১৭, বারি-১৮, বিনা সরিষা-৯ ও বিনা সরিষা ১১ জাতের আবাদ বেশি করেছেন। আমন ও বোরো ধানের মাঝামাঝি সময়ে চাষ হওয়া সরিষা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। সরিষার পাতা থেকে সৃষ্ট জৈব সার ধানের পুষ্টি জোগান দেয়।
বীজ রোপণের পর থেকে সর্বোচ্চ ৮০-৯০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। প্রথম দিকে আগাছা পরিষ্কারের কাজ ছাড়া তেমন পরিশ্রমও হয় না সরিষা চাষে। তাই স্বল্প সময়ে চাষ সম্ভব বলে অনেক চাষিই সরিষা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক মো. আব্দুস সাত্তার জানান, তিনি ১ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এ আবাদ করতে গিয়ে তার ৩ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।
বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকমল হোসেন বলেন, এ বছর মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে সরিষা রোপণ করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই কৃষকরা ফসল ঘরে তুলবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মাসুদ তুষার বলেন, হাওরাঞ্চলের দুই উপজেলায় সরিষার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে ১ হাজার কৃষককে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষি অফিসাররা চাষিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি।