সুনামগঞ্জে ইউএনওসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এক কর্মকর্তাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করেন কৃষক পতাকী রঞ্জন দাস। শাল্লা উপজেলার খলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
আদালতের বিচারক মো. হেমায়েত উদ্দিন অভিযোগ আমলে নিয়েছেন বলে জানান আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মল্লিক মো. মঈন উদ্দীন আহমদ।
মামলায় আসামি হলেন-শাল্লার সাবেক ইউএনও এস এম তারেক সুলতান; শাল্লার দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রিপন আলী, শাল্লা উপজেলায় হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের ২২ নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি হাসিম উদ্দিন, সদস্যসচিব মিনাদুল মিয়া, ৫৮ ন্য পিআইসির সভাপতি মজনু মিয়া, সদস্যসচিব ফজলুল হক, ২৪ নং পিআইসির সভাপতি কালাম মিয়া, সদস্যসচিব ফজল মিয়া, ৪৫ নং পিআইসির সভাপতি আব্দুল কাদির মিয়া, সদস্যসচিব সরাফত আলী, ৭৭ নং পিআইসির সভাপতি কালীপদ দাস, সদস্যসচিব প্রভাত দাস, ৭৮ নং পিআইসির সভাপতি সুজিত চন্দ্র দাস, সদস্যসচিব সমীরণ দাস, ৫৯ নং পিআইসির সভাপতি দীপক চন্দ্র দাস ও সদস্যসচিব পবিত্র মোহন দাস।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের নীতিমালা (কাবিটা) অনুযায়ী স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে পিআইসির মাধ্যমে কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য হাওর এলাকায় বাঁধের নিকটবর্তী জমির মালিক ও উপকারভোগীদের সম্পৃক্ত করে পিআইসি গঠন করার কথা উল্লেখ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সদস্যসচিব আবশ্যিকভাবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব পিআইসি গঠন করবেন। গঠিত পিআইসিগুলো ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করে অবশ্যই ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করবে। কিন্তু উল্লেখিত অনেক পিআইসির সভাপতি ও সদস্য সচিব সংশ্লিষ্ট বাঁধের পার্শ্ববর্তী জমির মালিক নন, এমনকি উপকারভোগীও নন এমন লোকজনকে নিয়ে পিআইসি গঠন করেন। উল্লেখিত সব বাঁধের নিকটবর্তী জমির মালিকদের অজ্ঞাত কারণে কোনো কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। উপজেলা কমিটির অন্য সদস্যদের মতামত না নিয়ে আসামিরা একে অপরের যোগসাজশে নীতিমালাবহির্ভূতভাবে পিআইসিগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে পিআইসি গঠন করে সম্পূর্ণ বাঁধের কাজ না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের ব্যবস্থা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী পতাকী রঞ্জন দাস বলেন, হাওরে আমার অনেক জমি রয়েছে। জমির ফসল নিয়ে আমি চিন্তিত। কৃষকদের স্বার্থে আমি মামলা করেছি।
সুনামগঞ্জ পাউবো জানিয়েছে, সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। সে অনুয়ায়ী শুক্রবার (আজ) সময়সীমা শেষ হচ্ছে। জেলায় এবার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে ৬৮৬ প্রকল্পে বাঁধের কাজ হচ্ছে। এ জন্য প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা।
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৯০ ভাগ। আমরা আরও ৭ দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি। এই সময়ের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ করা হবে বলে আশা করছি।