হবিগঞ্জ-২ আসনে ইসলামী দলগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত, প্রচারণা তুঙ্গে
আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে ইসলামী দলগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের হাইকমান্ড। দলগুলো হল জামায়াতে ইসলামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস এবং ইসলামী আন্দোলন। ইসলাম দলগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও দেশের অন্যতম বৃহত্তম দল বিএনপির প্রার্থী এখনো এ আসনে চূড়ান্ত হয়নি। বিএনপির একাধিক প্রার্থী স্ব স্ব অবস্থানে থেকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই আসনে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী দেয়া হতে পারে ত্রয়োদশ নির্বাচনের তফশীলের ঘোষনার পর।
এদিকে ইসলামী দলগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় তারা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বানিয়াচং উপজেলা আলেম উলামা অধ্যুষিত হওয়ায় এবং অনেক ভোটাররা ধর্মপ্রাণ হওয়ায় বড় ভোট ব্যাংক রয়েছে এসব ইসলামী দলের । অতীতে নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে এই উপজেলায় যে প্রার্থী এই ভোট ব্যাংকের ভোট পেয়েছেন তিনিই নির্বাচিত হয়েছেন । যার ফলে নির্বচেনের ফলাফল হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ভোট যার পাল্লায় যাবে তারই জয়ী সম্ভবনা বেশি থাকে।
জামায়াতে ইসলাম: এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর একক চূড়ান্ত প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতের হবিগঞ্জ জেলার রুকন সদস্য এবং ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি এডভোকেট শেখ জিল্লুর রহমান আজমী । তিনি প্রতিদিন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন হাট বাজার গাটে পথে-প্রান্তরে নিজেকে পরিচিত করতে নানা রকম আয়োজন করছেন। ব্যানার ও ফ্যাস্টুন সভা সেমিনারসহ মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন এমনকি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন এই নেতা।
শেখ জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের ওপর জুলুমের অবসান হয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে। এখন আমাদের দেশ ও সমাজ গোছাতে হবে। সবাইকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে। আমি চেষ্টা করবো মানুষের প্রত্যাশা পূরণের। আগামী নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনই এখন পর্যন্ত জনগণের চাওয়া। আমার নির্বাচনী আসনে মানুষ সর্বোচ্চ জুলুমের শিকার হয়েছে।
খেলাফত মজলিস: এই আসনটিতে খেলাফত মজলিসের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ। তিনি ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে বিএনপির জোটের প্রার্থী হিসেবে ৬০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন । তিনি বর্তমানে এই আসনে শক্ত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদিন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জনগনের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন।
মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ বলেন, জনগণের একজন সেবক হবার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন নির্বাচিত হলে আমি জনগণের সেবা করার জন্য প্রতিশ্রুুতিবদ্ধ।ইনশাআল্লাহ আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম: জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এ আসনে একক চূড়ান্ত প্রার্থী হয়েছেন ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি এবং জমিয়তের কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা এখলাছুর রহমান রিয়াদ। তিনি প্রতিদিন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ সময় মাওলানা এখলাছুর রহমান বলেন, পরিবর্তনের আন্দোলনে দেশবাসী অতীতে যেভাবে পাশে ছিলেন, ঠিক সেভাবেই আগামীতেও জনগণকে তিনি পাশে চান। সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আলিম-ওলামাদের হত্যা, গুম ও ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। এখন সময় এসেছে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার, দেশ বিনির্মাণের।
ইসলামী আন্দোলন: এই আসনটিতে ইসলামী আন্দোলনের বাংলাদেশের একক প্রার্থী হিসেবে জোরদার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা হাদিছুর রহমান।
মাওলানা হাদিছুর রহমান বলেন, আমি নির্বাচিত হলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ও মাদক নির্মূল করব। ইসলামী আন্দোলনের কোনো কর্মী মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এ ধরনের কোনো কাজে কখনো লিপ্ত থাকে না। যে যে অবস্থানে আছেন সেই অবস্থান থেকে সৎভাবে কাজ করলে বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ রূপান্তর করতে বেশি দিন লাগবে না।
নির্বাচন কমিশনের সুত্র অনুযায়ী, এ আসনটিতে দুটি উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৪৪ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ১৪৬ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ১৮৭ জন।